“আমাদের দেশ শাস্ত্রীয় সংগীত, শাস্ত্রীয় নৃত্যের দেশ, শিল্প-সংস্কৃতির দেশ। এখানে শাস্ত্রীয়ের নেতৃত্বের ধারা দুর্বল হতে থাকবে, তা হতে দেওয়া যায় না।” – লিয়াকত আলী লাকী, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের চর্চা ও প্রসার এবং নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ২৬-২৯ মে, ২০২৪ জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ১৬তম শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
শাস্ত্রীয় নৃত্য সত্রীয়, ওড্যিসি, গৌড়িও, ভরতনাট্যম এবং কথক নৃত্যের সমন্বয়ে ‘নৃত্যাঞ্জলি’ নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হয় ৪ দিনব্যাপী এ আয়োজন ১৬তম শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব । পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষার্থীবৃন্দ। এরপর অনুষ্ঠানের শুভ সুচনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।
চারদিন ব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক আফতাব উদ্দিন হাবলু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন “এক সময় এই বাংলায় শাস্ত্রীয় সংগীতে অনেক অনুষ্ঠান হতো কিন্তু এখন তার কমে গেছে। আমাদের দেশ শাস্ত্রীয় সংগীত, শাস্ত্রীয় নৃত্যের দেশ, শিল্প-সংস্কৃতির দেশ। এখানে শাস্ত্রীয়ের নেতৃত্বের ধারা দুর্বল হতে থাকবে তা হতে দেওয়া যায় না।”
উপমহাদশের শাস্ত্রীয় সংগীতের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সম্পর্কে তিনি বলেন, “ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র সংগ্রহশালা দুইবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর তানপুরা আছাড় দিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। কেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর উপর এতো আক্রোশ? কেন শাস্ত্রীয় সংগীত, নৃত্য শিল্পীদের উপর আক্রোশ? কিছু উগ্রবাদী যারা আছে তারা আমাদের নানান ভাবে এই শিল্পসাহিত্য সংস্কৃতির নানা রকমের সংকট তৈরি করছে। তারা মুষ্টিমেয় গুটিকয়েক, তারা এই কাজগুলো করে চলেছে।”
পরে অনুষ্ঠান আয়োজনে আগত সকল দর্শনার্থী ও শাস্ত্রীয় শিল্পীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি অনুষ্ঠানের শুরুতেই একক শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেন সুপ্রিয়া। তারপর দলীয় সংগীত পরিবেশন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর এককসংগীত পরিবেশন করেন অসিত দে। একক নৃত্য পরিবেশন করেন দীপা খন্দকার ‘কত্থক’। আবার সমবেত নৃত্য, পরিবেশন করে বাংলাদেশ মনিপুরী নটপালা সংগঠক (বাবুচান সিংহ) ‘মনিপুরি’। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন অনিল কুমার সাহা এবং কানিজ আহম্মেদী সিম্পি। একক নৃত্য ‘গৌড়িও’ পরিবেশন করেন র্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিস । একক নৃত্য পরিবেশন করেন মারিয়া ফারিহ্ উপমা ‘ভরতনাট্যম’।
১৬তম শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবে এর পরের পরিবেশনা সঙ্গীত, পরিবেশন করেন রেজওয়াদুল হক। একক সংগীত পরিবেশন করেন ড. প্রদীপ নন্দী। একক নৃত্য ‘ওড্যিসি’ পরিবেশন করেন তজিম চাকমা । এরপর একক নৃত্য পরিবেশন করেন এস এম হাসান ইশতিয়াক ইমরান ‘কত্থক’। সব শেষে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার (আনিসুর ইসলাম, হিরু) ‘ভরতনাট্যম।
আগামীকাল ২৭ মে ২০২৪ অনুষ্ঠান:
২য় দিনের পরিবেশনায় শুরুতেই সমবেত নৃত্য ‘মনিপুরি’, পরিবেশন করবেন দীক্ষা (সুইটি দাস চৌধুরী) । এরপর ‘কত্থক’ সমবেত নৃত্য পরিবেশন করবে নৃত্যাঞ্চল। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করবেন করিম শাহাবু্দ্দিন এবং ড. শেখর মন্ডল। ধারাবাহিক পরিবেশনায় পরের উপস্থাপনা একক নৃত্য, পরিবেশন করবেন অমিত চৌধুরী ‘ভরতনাট্যম’। আবার একক নৃত্য পরিবেশন করবেন স্নাতা শাহরীন ‘কত্থক। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করবেন শেখ জসীম এবং সাইফুল তানকার। একক নৃত্য ‘মনিপুরি’ পরিবেশন করবেন ওয়ার্দা রিহাব। এরপর একক নৃত্য ‘ভরতনাট্যম’ পরিবেশন করবেন প্রান্তিক দেব । এরপর একক সংগীত পরিবেশন করবেন অভিজিত কুন্ডু ও সুম্মিতা দেবনাথ সুচী। শেষে সমবেত নৃত্য ‘কত্থক’ পরিবেশন করবে রেওয়াজ পারফরম্যান্স স্কুল, নির্দেশনায় বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ ।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করবেন ডালিয়া আহমেদ।