গাইবান্ধার কামারজানীতে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি সংক্রান্তে সংবাদ প্রকাশের জেরে গাইবান্ধার তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সদর থানায় চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, দীর্ঘ দুই বছর ধরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানীতে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিল ওই এলাকার বালু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর,রানা,সাইফুল, মিল্টন সহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এই ঘটনায় গত ১৭ ফ্রেব্রুয়ারী আনন্দ টিভি সহ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এরপর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী কামারজানী ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা খন্দকার আজিজুর রহমান বাদি হয়ে বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করেন।
এদিকে মামলা হওয়ার পরেও তারা তাদের বালু উত্তোলন ও ব্যবসা চালিয়ে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ আল হাসান একাধিক বার অভিযান চালিয়ে বালু পরিবহন কাজে ব্যবহৃত অন্তত ২০ টি গাড়ী জব্দ করেন ও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এতে বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হলে তাদের মধ্য জাহাঙ্গীর আলম চলতি বছরের ২৮ মার্চ গাইবান্ধা সদর থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রায় এক মাস পরে গত ২৪ এপ্রিল সদর থানায় মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত করা হয়।
এই মামলায় গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মিলন খন্দকার, ডেইলি ট্রাইবুনালের জেলা প্রতিনিধি সুমন মিয়া ও নাগরিক ভাবনা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি রিয়ন ইসলাম রকিকে আসামি করা হয়।
এদিকে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ায় গাইবান্ধায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক, সামাজিক,পেশাজিবী সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়া মামলা থেকে নিঃশর্ত অব্যাহতি দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।
তিন সাংবাদিকের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হওয়ায় গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শফিউল ইসলাম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ( বাবস) এর জেলা সংবাদদাতা সরকার মোহাম্মাদ শহিদুজ্জামান,ইংরেজি দৈনিক নিউ নিউজ এজ এর প্রতিনিধি শামীম উল হক শাহীন, কালবেলার জেলা প্রতিনিধি নেয়ামুল আহসান পামেল,বাংলাভিশনের ফিরোজ কবীর মিলন, নাগরিক টিভির আনোয়ার হোসেন শামীম, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি রওশন হাবীব জুম্মন, এশিয়ান টিভির সুমন মন্ডল, প্রতিদিনের সংবাদের মুকুল মাসুদ,স্থানীয় সাপ্তাহিক আগামীর পথের প্রকাশক ও সম্পাদক কাজী জিয়াউল হাফিজ, সাপ্তাহিক যুবতারা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহামুদ্দুন্নবী মিঠু, দৈনিক নাগরিক ভাবনার রিয়ন ইসলাম রকি, গাইবান্ধা টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার হোসাইন, দৈনিক দিনের আলোর শাহীন মিয়া, দৈনিক গণমুক্তির সাদ্দাম হোসেন পবন, দৈনিক নবজীবনের মেহেদী বাবু, দৈনিক আলোর দিগন্তের জসিম মিয়া, এশিয়ান টিভির ক্যামেরা পার্সন নিশাদ হোসেন, দৈনিক গাইবান্ধা দর্পণের শামসুর রহমান হৃদয়, ডেইলি ট্রাইবুনালের মোহাম্মদ সুমন মিয়া, ডেইলি পোস্টের মনিরুজ্জামান খান মনির সহ স্থানীয় সাংবাদিকগণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এসময় তারা বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে সাংবাদিককে হয়রানি করা খুবই দুঃখজনক। এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমুলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা থেকে তিন সাংবাদিককে অব্যহতি প্রদানের দাবিও জানান তারা।