ডিবি পরিচয়ে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর মসজিদ মোড় এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া ৭০ হাজার টাকা উদ্ধারে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। ঘটনার এক মাস পরেও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে জড়িত একাধিক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হলেও কোন আসামিকে গ্র্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাবনার ইভা প্রাইভেট কোম্পানির একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা কুষ্টিয়া থেকে লুব্রিকেন্ট বাজারজাত করে পাবনায় ফেরার পথে ঈশ্বরদীর সাহাপুর মসজিদ মোড় এলাকায় পৌছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ৪ ছিনতাইকারী একটি সাদা মাইক্রোবাস নিয়ে সিএনজির গতিরোধ করে। সিএনজিতে বসে থাকা ইভা প্রাইভেট কোম্পানির ম্যানেজার মো: জাহিদ এমরানকে ডিবি পরিচয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসের সিটের নিচে আটকে রাখে। এ সময় ম্যানেজারের পকেটে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। অপরদিকে দুই ছিনতাইকারী সিএনজি চালক মো: জাহাঙ্গীর আলমকে বেধরক মারপিট করে ছলিমপুরের একটু দূরে নিয়ে সিএনজি চালকের মোবাইল থেকে ইভা প্রাইভেট কোম্পানির মালিক মো: ইয়ার উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে সিএনজি চালক মো: জাহাঙ্গীরকে ছেড়ে দেয় এবং ম্যানেজারকে দাশুড়িয়া-রূপপুর মহাসড়কের পাশে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে দেয়।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
এ ঘটনায় গত ১৩ই এপ্রিল ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দাখিল করেন ইভা প্রাইভেট কোম্পানির ম্যানেজার মো: জাহিদ এমরান। অভিযোগ দাখিলের পরপরই ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রফিকুল ইসলাম বিষয়টি অধিক তদন্ত পূর্বক দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টর কান্তি কুমার মোদককে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে তদন্ত শুরু করেন এসআই কান্তি কুমার মোদক।
তদন্তের শুরুতেই এসআই কান্তি কুমার মোদক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঈশ্বরদীর জগন্নাতপুর এলাকার যে বিকাশের দোকান থেকে ছিনতাইকারীরা টাকা উত্তোলন করে সেই দোকান খুঁজে বের করে দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন এবং অপরাধীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হন। কিন্তু রহস্যজনক কারনে এসআই কান্তি কুমার মোদক মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে জগন্নাতপুরের জিহাদ নামে এক পলিটেকনিক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসে ৮ ঘন্টা পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে এসআই কান্তি কুমার মোদককে ফোন করলে তিনি বলেন, যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে সেই এলাকা তার পুলিশ ফাঁড়ির এলাকার বাইরে, ফলে তিনি আসামি ধরতে পারছেননা। তদন্তের এক মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের কেন আটক করা সম্ভব হচ্ছেনা এমন প্রশ্নের জবাবে এসআই কান্তি কুমার মোদক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি অচিরেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামীর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে এ রিপোর্ট লেখার সময় ঘটনার এক মাস দশ দিন পেরিয়ে গেলেও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রশাসনের হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।