দক্ষিণা বাতাসে ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো ক্ষেতে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই উৎসব। তবে চাহিদা মতো দাম না থাকায় ভালো ফলনেও হতাশ ধানচাষিরা।
জেলার ২২ টি ইউনিয়নে বোরো ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সোনালি রঙের পাকা ধান। যেন মাঠে সোনা ছিটিয়ে পড়ে আছে। মনের সুখে এসব ধান কাটছে চাষিরা। কাটা-মাড়াই খরচ মিলে শ্রমিকরা নিচ্ছেন বিঘাপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। বাজারে ধানের ভালো দাম না থাকায় উৎপাদন খরচ ওঠানো নিয়েই শঙ্কিত চাষিরা। তবে সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হলে হয়তো দাম বেশি পাওয়া যেত, এমনটাই আশা কৃষকদের। ২১ নং ঢোলারহাট এলাকার গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এবার আমি পাঁচ বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করেছি। ফলন আল্লাহ দিলে অনেক ভালো হয়েছে। কাটা-মাড়াই শুরু করেছি। বিঘাপ্রতি ২৩-২৪ মণ ধান ঘরে তুলছি। তবে বাজারে ধানের দাম কম।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মাদপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল বলেন, ১৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। কয়েকটা জমির ধানে পাক ধরেছে। এসব পাকা ধান কাটতে লোক লাগিয়েছি। বাকি জমির ধান পাকতে আরও ৮-১০ দিন সময় লাগবে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করছি ফলনও ভালো পাবো।
ধানকাটা শ্রমিক আশরাফ আলী বলেন, আমরা ১০ জনের একটি দল, একসঙ্গে ধান কাটা-মাড়াই করছি। শুধু ধান কেটে নিলে আমরা বিঘাপ্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা নিচ্ছি। আর কাটাসহ মাড়াই করে নিলে ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা নিচ্ছি। আমরা দিনে প্রায় ৪ থেকে ৫ বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করছি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষিবৃধ কৃষ্ণ বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমি। মাঠে বোরো ধানের ফলন এখন পর্যন্ত ভালো আছে। বিভিন্ন চিকোন জাতের ধান বিঘাপ্রতি ২৫-২৬ মণ হচ্ছে। এছাড়াও উন্নত জাতের বীজ থেকে প্রতি শতকে ১ মণ হারে কৃষকরা ধান পাচ্ছেন। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকরা তাদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, জেলার ২২টি ইউনিয়নে মোট ২৫ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এ জেলা ধানের জন্য বিখ্যাত, পাশাপাশি অন্যান্য ফসলও অনেক ভালো হয়ে থাকে। আমরা কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। আশা করছি, কৃষকরা লাভবান হবে।