উত্তরের জেলা গাইবান্ধার প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ কেবল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল। আধুনিক যন্ত্রপাতি , জনবল ও শয্যা সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেও দূর্ভোগ পোহাতে হয় রোগী ও স্বজনদের। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগের শিকার হন মূমূর্ষ রোগীর স্বজনেরা। তবে দূর্ভোগের চেয়েও বেশি থাকে মৃত্যু ঝুঁকি।
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট ( আইসিইউ) সুবিধা না থাকায় রংপুর কিংবা বগুড়া নিয়ে যাওয়ার পথে বিনা চিকিৎসায় প্রতি বছর মারা যাচ্ছে শত শত রোগী। জেলার চিকিৎসা সেবার এমন বেহাল দশা গত কয়েক দশক ধরে চলতে থাকলেও সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেনি দায়িত্বশীল কেউই । তবে গাইবান্ধা-৫ আসন (ফুলছড়ি- সাঘাটা) আসনের সংসদ সদস্য মাহামুদ হাসান রিপনের প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচতে যাচ্ছে গাইবান্ধাবাসীর।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
সম্প্রতি জাতীয় সংসদের এক অধিবেশনে জেলার স্বাস্থ্য সেবার বেহাল চিত্র তুলে সংসদ সদস্য বলেন, দুঃখ জনক হলেও সত্যি যে রংপুর বিভাগের ৮ টি জেলার মধ্যে শুধু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট থাকলেও গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নেই আইসিইউ সুবিধা। গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুরত্ব প্রায় ৭৭ কিলোমিটার আর বগুড়ার দুরত্ব প্রায় ৬৬ কিলোমিটার। গাইবান্ধা থেকে একজন রোগীকে জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে তাই রংপুর ও বগুড়া যেতে হয় । দীর্ঘ পথে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার আগেই অনেক রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বিষয়টি অত্যন্ত কষ্টকর ও মানবেতর।
সংসদ সদস্যের এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে, বিষয়টি আমলে নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গত ১৬ জানুয়ারি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব আরাফাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে , গাইবান্ধা -০৫ আসনে সংসদ সদস্য মাহামুদ হাসানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে গাইবান্ধা জেলায় বসবাসরত মানুষের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে একটি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট( আইসিইউ) নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয় ।
এদিকে আইসিইউ নির্মাণের খবরে উচ্ছ্বসিত গাইবান্ধা জেলাবাসী সংসদ সদস্য মাহামুদ হাসান রিপনের প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। নিরাপদ চিকিৎসা চাই গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি শেখ রোহিত হাসান রিন্টু বলেন, গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা চালু করার উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। প্রকল্পটি যত দ্রুত বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের মানুষেরা নিরাপদ চিকিৎসা সেবা পাবে ।
উল্লেখ্য , দীর্ঘদিন ধরে ১০০ শয্যার হাসপাতাল বিল্ডিংয়ে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। এতে নিয়মিত রোগী ভর্তি থাকেন ৩ শতাধিক। বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসেন প্রতিদিন প্রায় ১২০০-১৫০০ মানুষ। পর্যাপ্ত জায়গা না হওয়ায় রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে হাসপাতাল চত্বরে ২০১৮ সালে নতুন ১০ তলা ও ৬ তলা দুটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।