ডিএনসিসিতে শুরু হলো সপ্তাহব্যাপী বর্জ্য প্রদর্শনী

ডিএনসিসিতে শুরু হলো সপ্তাহব্যাপী বর্জ্য প্রদর্শনী

জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন খালে, ড্রেনে ও যত্রতত্র ফেলে দেওয়া বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ করে সপ্তাহব্যাপী বর্জ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ডিএনসিসি।

শনিবার (১১ মে) সকাল ১১টায় এই বর্জ্য প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। এসময় তিনি ঘুরে ঘুরে বর্জ্যগুলো দেখেন, এবং প্রদর্শনীতে আসা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের সচেতন করেন। গুলশান-২ ডিএনসিসি’র নগর ভবনের সামনের রাস্তায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে । এই প্রদর্শনী চলবে ১১ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন        

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমরা দেখছি অনেকে অসচেতনভাবে গৃহস্থালির বর্জ্য খাল, ডোবা, নালা, ড্রেনে ফেলে দেই। সারফেস ড্রেনে ও খালে এমন কোন ময়লা নেই পাওয়া যায় না। আমরা অবাক হয়ে যাই প্রতিনিয়ত নানা ধরনের ময়লা নির্বিচারে সবাই ফেলে দিচ্ছে খালে ও ড্রেনে। ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন খাল থেকে উদ্ধার করা পরিত্যক্ত পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিত্যক্ত লেপ, তোশক, সোফা, লাগেজ, খাট, ক্যাবল, টায়ার, কমোড, ফুলের টব, রিকশার অংশবিশেষ, টেবিল, চেয়ার, বেসিন, ব্যাগ, প্লাস্টিকের বিভিন্ন পাত্রসহ নানা পরিত্যক্ত পণ্য। এগুলোর কারণেই মূলত পানি প্রবাহ নষ্ট হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার।’

তিনি বলেন, ‘ড্রেনে, খালে ও যত্রতত্র এসব বর্জ্য ফেলায় দূষণ হয় নগরের পরিবেশ। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আজকে এই বর্জ্য-প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে, যাতে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার সৃষ্টি হয়। জনগণ যেন বুঝতে পারে কি ধরনের বর্জ্য ড্রেনে ও খালে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে এই জন্যই এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘উন্নত দেশে বাড়ির সামনের দিকে খাল থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো চিত্র। সবাই খাল পেছনে রেখে বাড়ি বানায়। খালগুলোকে সবাই ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শহরের প্রতিটি খাল থেকে নানা ধরনের বর্জ্য পাওয়া যাচ্ছে। খালগুলোতে চেয়ার টেবিল, লেপতোশক, টায়ার, কমোড, সোফাসহ এমন কিছু নেই যে পাওয়া যায় না। সারফেস ড্রেনে প্লাস্টিক বোতল, পলিথিনে ভর্তি। এগুলোর কারণে ড্রেন ও খালের প্রবেশ মুখ ব্লক হয়ে থাকে। ফলে বৃষ্টি হলেই জলজট সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ড্রেন থেকে বর্জ্য অপসারণ করতে সময় লেগে যায়।’

মেয়র বলেন, ‘এছাড়াও যত্রতত্র বর্জ্য ফেলায় জন্ম হয় এডিস মশার। আমাদের অসচেতনতায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হতে পারে। মনে রাখবেন, খাল-ড্রেন পরিষ্কার থাকলে জলাবদ্ধতা ও মশার উপদ্রব থেকে আমরা রক্ষা পাবো। খাল জলাধার রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর খাল-ড্রেন ও জলাধারে ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা অপরাধ। এই বিষয়ে আমি জনগণের সহযোগিতা চাই। নিজ আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখি, সবাই মিলে সুস্থ থাকি।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজধানীতে বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতার জন্য দশটি অঞ্চলে দশটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে জলজট দূর করতে এই কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। কোথাও পানি জমে থাকলে নগরবাসীকে ১৬১০৬ হট লাইনে যোগাযোগ করার কথা জানান তিনি।

মেয়র বলেন ডিএনসিসি’র হট লাইনে অভিযোগ করার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য কুইক রেসপন্স টিম পৌঁছে যাবে এবং কাজ শুরু করবে। খালে বর্জ্য ফেলা নিয়ে মেয়র বলেন, ‘বৃষ্টি হলে শহরে যেভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো সেটা অনেকাংশে সমাধান হয়েছে। একসময় বিভিন্ন প্রধান সড়কেও কয়েকদিন জলাবদ্ধতা হতো। এখন আর প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতা হয় না। অল্প সময়ের মধ্যেই জলাবদ্ধতা নিরসন এখনো অল্প এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। এ জলাবদ্ধতা শুধু মাত্র ড্রেনে ময়লা জমে জলাবদ্ধতা হয়। এখন কেউ খাল ও ড্রেনে বর্জ্য ফেললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে হুশিয়ারি দেন ডিএনসিসি মেয়র।’

বর্জ্য প্রদর্শনীতে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মোঃ মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সকল বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

শেয়ার করুন:

Recommended For You