ড. ওয়াজেদ মিয়া রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি থেকেও ক্ষমতাচর্চায় আগ্রহী হননি : নানক

ড.ওয়াজেদ মিয়া রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি থেকেও ক্ষমতাচর্চায় আগ্রহী হননি

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেছেন, ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে থেকেও তার নির্মোহ জীবনযাপন ড.ওয়াজেদ মিয়াকে জাতির কাছে চির অমর করেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও, রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর সবচেয়ে কাছাকাছি থেকেও কোনোদিন তিনি ক্ষমতাচর্চায় আগ্রহী হননি।    

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন   

আজ মোহাম্মদপুর টাউন হলে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম মন্ডল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোঃ শৌকত আকবর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ।

মন্ত্রী নানক বলেন, ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। শুধু পড়াশোনা নয় রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার সময় থেকেই ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট হতে শুরু করেন রাজনীতির সাথে। ১৯৬১ সালের প্রথম দিকে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদশের্র প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন । ১৯৬২ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে এবং ওই বছরেই জেনারেল আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেপ্তারও হন তিনি।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সময়টা ১৯৬৭ সাল। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ। ছয় দফা আন্দোলনের কারণে গোটা দেশে তখন বিরাজ করছে ভীতিকর পরিস্থিতি। এ রকম পরিস্থিতিতে ১৭ নভেম্বর পবিত্র শবেবরাতের রাতে বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের পছন্দের পাত্র, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেধাবী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা। বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাবা শেখ মুজিব জেলে থাকায় তাদের বিয়ের আয়োজনটি ছিল খুব সাদামাটা। বিয়ের পরদিন জেলগেটে ওয়াজেদ-হাসিনা নবদম্পতিকে দোয়া করেন বঙ্গবন্ধু। নতুন জামাইকে সে সময় তিনি একটি রোলেক্স ঘড়ি উপহার দেন। এই উপহার আজীবন সযত্নে রেখেছিলেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া।

মন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭১ সালে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এর আগে-পরের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে তার উপস্থিতি ছিল। তিনি সর্বদা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু ড. ওয়াজেদ মিয়াকে বিজ্ঞানী হিসেবেই তাকে দেখতে চেয়েছেন। রাজনীতিতে তাকে কখনোই জড়ানোর চেষ্টা করেননি। ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। ৪০ বছরের বিবাহিত জীবনে ড. এম এ ওয়াজেদের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি তার পরিবারের পাশে থেকে যে ধৈর্য, সাহস ও সেবার পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন, তা অসাধারণ।

নানক বলেন, বিজ্ঞান নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন ওয়াজেদ। প্রথিতযশা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশের রূপপুরে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপিত হবে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, বিশ্বমাঝে বাংলাদেশ বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ একটি দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার নিরলস পরিশ্রম অব্যাহত রেখেছিলেন আমৃত্যু। তার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য সামনে রেখে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। বাংলাদেশকে বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক ডিজিটাল রাষ্ট্রে পরিণত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You