আমাদের মনের ল্যাবরেটরি পরিষ্কার করতে হবে : খাদ্যমন্ত্রী

আমাদের মনের ল্যাবরেটরি পরিষ্কার করতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশব্যাপী খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে চলেছি। মানুষের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দিতে দেশের ৭ বিভাগের সাতটি ভ্রাম্যমান ল্যাবরেটরি চালু করা হয়েছে। তবে শুধু ভ্রাম্যমান ল্যাবরেটরির মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা কঠিন। তাই ভোক্তা, সরবরাহকারী এবং যারা উৎপাদনকারী তাদের মনের ল্যাবরেটরি পরিষ্কার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী জনাব সাধন চন্দ্র মজুমদার।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন  

বুধবার (০৮মে) রাজধানীর শাহবাগস্থ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভ্রাম্যমাণ নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার’ উদ্বোধন ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আমরা যতোই মোবাইল ল্যাবরেটরি দিই না কেনো; যারা ভোক্তা, যারা সরবরাহকারী, যারা উৎপাদনকারী তাদের মনের ল্যাবরেটরি পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে, যতোই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করি না কেনো, আমার মনে হয় কোনো কাজ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘দেশে এক সময় মঙ্গা ছিলো, তখন মানুষ খাবার পেতো না। চালের দাম বেড়ে গেলে মানুষ হইচই করে, আবার কমে গেলে কৃষকেরা হইচই করে। দেশে এখন আর খাদ্যের অভাব নাই। এটা সরকারের একটি বিরাট অর্জন। ‘

এ সময় তিনি নিরাপদ খাদ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে বাসনা তা পূরণ করার জন্য জনগণকে নিয়োজিত হবার নির্দেশনা ও দেন। সবাইকে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করে মন্ত্রী বলেন, ‘সবাই মিলে সচেতনতা বৃদ্ধি করি, নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করি, অনিরাপদ খাদ্য বর্জন করি এবং যারা খাদ্য অনিরাপদ করবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।’ কর্তৃপক্ষের সদস্য আবু নূর মো. শামসুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি।

সচিব বলেন, ‘খাদ্যের মান বুঝার সবচেয়ে বড় উপায় হলো খাদ্যপরীক্ষা। পরীক্ষা করতে না পারলে নিরাপদ বা অনিরাপদ কি-না বুঝতে পারবো না। জাতীয় পর্যায়ে দেশে ল্যাব সক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ। ভ্রাম্যমান পদ্ধতিতে জেলা বা বিভাগে পরীক্ষা করা ছিলো অকল্পনীয়। তাই আজকের দিনটি বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।’

এসময় তিনি ভ্রাম্যমান মোবাইল ল্যাব সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগসহ অন্যান্যদের সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব জাকারিয়া। তিনি দিনটিকে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য একটি স্মরণীয় পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় বিভাগীয় পর্যায়ে খাদ্যের নমুনা পরীক্ষা সহজতর করার জন্য চীন থেকে সাতটি মোবাইল ল্যাব ক্রয় করা হয়।

যেসকল পরিক্ষা করা যাবে এই মোবাইল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে:

প্রধান প্রধান পরীক্ষা-

দুধে ডিটারজেন্ট, স্টার্চ, ইউরিয়া এর উপস্থিতি, ঘি-তে বনস্পতি/হাইড্রোজিনেটেড এডিবল ফ্যাট এর উপস্থিতি, হলুদ গুঁড়ায় লেড ক্রোমেট এর উপস্থিতি, মরিচের গুঁড়ায় ইটের গুঁড়ার উপস্থিতি, গোল মরিচে পেঁপে বীজ মেশানো, নারিকেল তেলে ভেজাল, শাক-সবজি ফলমূলে রং দেয়া, শাক-সবজি, ফলমূলে বালাইনাশকের মাত্রা নির্ণয়, মধুতে চিনির মিশ্রণ, পাউরুটিতে ক্ষতিকর পটাশিয়াম ব্রোমেটের উপস্থিতি, খাদ্যে অননুমোদিত কৃত্রিম রং এর উপস্থিতি, খাদ্যে ক্ষতিকর ভারী ধাতুর উপস্থিতিসহ আরো অনেক পরীক্ষা স্বল্প সময়ে করা যাবে এই মোবাইল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে।

অনুষ্ঠানে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল জেলার নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তাদের কাছে মোবাইল ভ্যানের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

শেয়ার করুন:

Recommended For You