চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে গত মধ্যরাতে। এ দুটি উপজেলায় ভোট গ্রহন হবে আগামীকাল বুধবার। এরই মধ্যে দুটি উপজেলার প্রার্থীরা টানা ১৩ দিন ধরে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণায় ছিলেন। কেউ গণসংযোগ, কেউ পথসভা, কেউবা আবার উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোটারের কাছে ছুটে গিয়েছেন। করেছেন ভোট প্রার্থনা।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
এ দুটি উপজেলাতে আবারও প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান দুই চেয়ারম্যানই। সেই সাথে যোগ হয়েছে আরও কিছু নতুন মুখ। নতুন-পুরাতন প্রার্থীদের মধ্যেই চলছে লড়াই। তাদের ভোটযুদ্ধে লড়াইয়ের ফল ঘোষনা হবে আগামীকাল। এদিকে, দুটি উপজেলাতেই ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দুইজনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহন। তবে সবার আগ্রহ চেয়ারম্যান পদ নিয়েই।
দামুড়হুদা উপজেলা:
এ উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের সহোদর আলী মুনছুর বাবু এবারও ভোটযুদ্ধে লড়ছেন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এ উপজেলায় আরও আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এস এ এম জাকারিয়া আলম। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক অ্যাড. আবু তালেব ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। এই তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীরাই জোর প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনজনের মধ্যে আলী মুনছুর বাবু বর্তমান চেয়ারম্যান হয়ে পুরাতন হিসেবে প্রার্থী হলেও তার প্রতিদ্বন্দ্বী নতুন দুই মুখ।
ভোটের জয়ের ব্যাপারে এবারও আশাবাদী আলী মুনছুর বাবু। তিনি বলেছেন, ‘আমি গত ৫ বছর উপজেলাবাসীর সাথে সুখে দুঃথে সাথে ছিলাম। এ সময়ে উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ আমি করেছি। আমার প্রতি ভোটারদের আস্থা আছে। আমারও বিশ^াস আমি নির্বাচনে জয়ী হবো।’
আরেক প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের এস এ এম জাকারিয়া আলম বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সরকারের সাথে জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করে আসছি। আমি জানি কিভাবে জনগণকে সেবা দিতে হয়। নির্বাচিত হলে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আমি উপজেলাবাসীর কল্যানে কাজে লাগাবো। এবার মানুষ নতুন নেতৃত্ব চাই। তাই আমি আশাবাদী নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো।’
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী অ্যাড. আবু তালেব মনে করেন, ভোটররা ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন। বিভিন্নভাবে তিনি সাধারন মানুষের পাশে থাকেন, তাই ভোটাররা তাকেই ভোট দিবেন।
এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দি¦তায় নির্বাচিত হয়েছেন শফিউল কবির ইউসুফ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তানিয়া খাতুন ফুটবল প্রতীক নিয়ে ও সাহিদা খাতুন কলস প্রতীক নিয়ে প্রতদ্বিন্দ্বীতা করছেন।এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৭৯ জন, নারী ১ লাখ ২২ হাজার ৯৪১ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ২ জন।
জীবননগর উপজেলা:
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন দুই জন। যাদের মধ্যে একজন নতুন ও অপরজন পুরাতন। পুরাতন হিসেবে জীবননগর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান এবার কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে নতুন মুখ হিসেবে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী এসকে লিটন লড়ছেন আনারস প্রতীক নিয়ে। দুই জনই তাদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান কাপ-পিরিচ প্রতীকের হাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘আমি জনপ্রতিনিধি থাকাকালে এলাকার স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসা রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করেছি। প্রতিটি সেক্টরে আমি উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছি। এছাড়া জনগণের যে প্রত্যাশা তা পূরন করার চেষ্টা করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবারও আমি জয়ী হবো।’
অপর প্রার্থী আনারস প্রতীকের এসকে লিটন বলেন, ‘মানুষ নতুন কাউকে চাই। গত ৫ বছরে নিশ্চয় মানুষ তা দেখেছে। এজন্য এবার যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে চাই। ভোটাররা ভোট দিতে বেশ আগ্রহী। পরিবেশ ঠিক থাকলে আনারস প্রতীকেই তারা ভোট দিবেন।’
এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈসা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আয়েশা সুলতানা লাকী কলস প্রতীক ও রেনুকা আক্তার রিতা হাঁস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৮ হাজার ১৬৭ জন ও নারী ৭৭ হাজার ২২৯ জন।