মহেশখালী উপকূলে বাড়ছে শিশুশ্রম

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে বাড়ছে শিশুশ্রম। শিশুরা যুক্ত হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ পেশার সাথে। ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের দেখা যায় টমটম চালাতে, কেউ কাজ করছে চা’য়ের দোকানে, কেউ বা শুঁটকি মহালে, অনেকে ভ্যানগাড়িতে করে ভাঙ্গারির ব্যবসা করছে। এছাড়াও বিভিন্ন গাড়ি ও বোটের হেল্পার কিংবা দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় শিশুদের।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন   

এদের অনেকেই কয়েকমাস আগেও পড়াশোনার সাথে যুক্ত ছিলো, কিন্তু পারিবারের অভাব-অনটন এবং পড়াশোনার খরচ জোগাতে না পারায় এই বয়সে বেছে নিতে হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। যে-সময়টা স্কুল আর খেলার মাঠে কাটানোর কথা, সে সময়টা কাটছে টমটমের স্টিয়ারিং, চা’য়ের দোকানের প্লেট পরিস্কার এবং ভ্যানের প্যাডেলে। আমাদের কথা হয় চায়ের দোকানের শিশু শ্রমিক রিয়াদের সাথে। গতবছরেরও সে উত্তর নলবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তো। সহপাঠীদের সাথে ছিলো সখ্যতা, স্বপ্ন দেখতো পড়াশোনা করে সেনাবাহিনী হওয়ার। কিন্তু তার সে স্বপ্ন পরিবারের অভাব অনটন চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে। এখন ভোর ৬ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত তার সময় কাটে চায়ের দোকানে শ্রম দিয়ে।

টমটম চালানো আব্দুর রহিমের পাইলট হওয়ার স্বপ্ন এখন বন্দি হয়ে আছে টমটমের স্টিয়ারিং এ। বাবা মারা যাওয়ার পর ১২ বছরের রহিমের উপর আসে পরিবারের ভার। পড়াশোনা ছেড়ে এখন ভাড়ায় টমটম চালিয়ে তার উপার্জিত অর্থে চলে সংসার। আব্দুর রহিম জানান, পড়াশোনা করে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ছিলো তার। তবে গরীব ঘরে জন্ম,বাবা মারা যাওয়ার পর সে স্বপ্ন থাকলো না আর। শিশুশ্রমে যুক্ত এসব শিশুদের কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায় দরিদ্রতা এর প্রধান কারণ।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের তথ্যমতে, শিশুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও প্রভাবের দিক দিয়ে বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫তম। উপকূলীয় এলাকায় দারিদ্র্যের কষাঘাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা সম্ভব নয়, তবে সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টায় ক্ষতি কমানো সম্ভব। উপকূলে জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়নের কারণে শিশুশ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশুশ্রমের পাশাপাশি বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশু অপরাধও। এটি রোধ করতে স্থানীয় প্রচেষ্টা ও শিশুশ্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলোকে আন্তরিক হতে হবে। তথ্যমতে, মহেশখালীতে ২০টির ও অধিক এনজিও সংস্থা কাজ করে। তবে শিশুশ্রম রোধ করতে কিংবা শিশু অধিকার ও ঝরেপড়া শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন এনজিও সংস্থার কাজ খুব একটা দেখা যায় না।

এই বিষয়ে জানতে, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মহেশখালী উপজেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতেও নেই মহেশখালীতে কী পরিমাণ শিশুরা শিশুশ্রমের সাথে যুক্ত তার সঠিক তথ্য।

শেয়ার করুন:

Recommended For You