নওগাঁর নিয়ামতপুরে সরকারি খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার খালের পলি অপসারনের কথা শ্রমিক দিয়ে। কিন্তু খনন কাজ হচ্ছে ভেকু মেশিনের সাহায্যে। মাটি ফেলার কথা খাল থেকে দূরে। কিন্তু খননের পর মাটি ফেলা হচ্ছে খালের পাড়েই। এতে বর্ষাকালে এ মাটি আবার খালেই এসে পড়বে। তাছাড়া খাল যথাযথ গভীর বা প্রশস্ত করা হচ্ছে না।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
খালের মাটি কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লোকজন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সরকারি অর্থ লুটপাটের পাঁয়তারা চলছে। কৃষকেরা উপকৃত হবেন না তবে সংশ্লিষ্টরা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জানা গেছে, নিয়ামতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নে পানি নিষ্কাশন এবং সংরক্ষণের জন্য তিনটি উপপ্রকল্পের মাধ্যমে একটি খাল খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ লাখ টাকা। উপজেলা এলজিইডির বাস্তবায়নে নিয়ামতপুর গাহইল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি এ খনন কাজ তদারকি করছে।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধিত এবং এলজিইডির ক্রাইটেরিয়া পরিপূর্ণকারী কোনো সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর তাদের কাজের প্ল্যান এবং ডিজাইন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সংস্থাটির নির্বাচিত কমিটি তখন স্থানীয়ভাবে লেবার কন্ডাক্টিং সোসাইটি (এলসিএস) তৈরি করে। সুবিধাভোগী জনগণের মাধ্যমে ১০-১৫জনের আলাদা এলসিএস গ্রুপ করে এ কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু সরেজমিন এসব খালে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শুকনো খালের মাটি শ্রমিকেরা কোদাল দিয়ে কাটার কথা থাকলে খননকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে যন্ত্র। আর খালের পাড়েই ফেলা হচ্ছে মাটি।
খালকে নালায় পরিণত করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ভেকু মেশিনের বডির মাপ অনুযায়ী খালের প্রস্থ হচ্ছে ৭-৮ ফুট। যা হওয়ার কথা ছিল ১০ ফুট। নালার মতো করে খনন করায় খালের পানিতে ওই পরিমাণের অর্ধেক জমিতেও সেচ দেওয়ার পানি মিলবে না বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষক ও অন্য ভুক্তভোগীরা। মেশিন ব্যবহার করে মাটি কাটার ফলে কর্ম মিলছে না দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রকল্পের উদ্দেশ্য। নাম প্রকাশ না করে বেশ কয়েকজন কৃষক অনিয়মের কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তবে এ বিষয়ে নিয়ামতপুর গাহইল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, সবকিছু তদারকি করছে নিয়ামতপুর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও জেলা ইঞ্জিনিয়ার। তাদের কথা মত আমরা কাজ করছি। ভেকু মেশিন ব্যবহারের বিষয় আমার জানা নেই। তবে যতটুকু সম্ভব প্রাক্কলন অনুসারেই খনন কাজ হচ্ছে। গভীরতার বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়। ভিক্ষু মেশিনের মালিক রাজু বলেন, আরে ভাই এ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাইন না। কাজ আনতে অনেক টাকা লাগে। প্রায় দশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে সমিতির সভাপতির এ কাজ আনতে। অফিসের লোকেরা মাপজোগ করতে তেল খরচসহ বিভিন্ন খরচ দিতে হয়।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রকল্পের কাজ ৮৪ হাজার টাকা। কাজের ৭৫% মেশিন দ্বারা এবং ২৫% লেবার দ্বারা বাস্তবায়িত হবে। আর খননের বিষয়ে সু-নির্দিষ্ট কোন কিছু নাই। কোথাও ২ ফিট, কোথাও ৩ ফিট কোথাও ৬ ফিট খনন করা লাগতে পারে। সাইডের মাটি প্রয়োজনে দিতে হবে। এলজিইডির নিয়ামতপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে যতটুকু জানি, কাজ চলমান রয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনেই খাল খননের কাজ হচ্ছে। বিলও পরিশোধ হয়নি। নিয়ম অনুয়ায় লিয়ার থেকে গভীরতা ৩ ফুট এবং প্রস্থ সাড়ে ৬ ফুট। আবারও তদারকি করা হবে।