বাজারে ধানের দাম কম, শ্রমিকের মজুরি বেশি

দেশ জুড়ে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওড়গুলোয় পুরোদমে চলছে ধান কাটা-মাড়াই ও শুকানোর কাজ। সোনার ধানে ঘর-আঙিনা ভরে উঠলেও কৃষকের মুখে নেই হাসি। কারণ, তারা পাচ্ছেন না ন্যায্য দাম।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন

সরকার এবার ধানের দাম মণপ্রতি ১২৮০ টাকা নির্ধারণ করলেও কেনা শুরু করবে ৭ মে থেকে। কিন্তু অনেক কৃষকই ইতোমধ্যে ধান ঘরে তুলেছেন। তারা চাষাবাদের খরচের দেনা শোধ এবং ধান কাটা ও মাড়াইয়ের খরচ মেটাতে এখনই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এ সুযোগ নিচ্ছেন কতিপয় ফড়িয়া ও আড়তদার। কৃষকরা জানান, ফসলের মাঠ দেখে তাদের মন ভরে গেলেও বাজারে গিয়ে হতাশায় ডুবছেন। সার, কীটনাশক, ধান কাটার খরচসহ সব খাতে তাদের অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে। কিন্তু এখন মনপ্রতি মানভেদে ৭২০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ একজন ধানকাটা শ্রমিকের দৈনিক মজুরিই দিতে হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক। তবে আড়তদাররা বলছেন, বাজারে আমদানি বেশি, চাতাল মালিকরা এজন্য দাম কমিয়ে দিয়েছেন।

গত ২১ এপ্রিল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, চলতি বছর কৃষকের কাছ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন ধান কিনবে সরকার। গতবার ৩০ টাকা দরে কেনা হয়েছিল। সে হিসাবে এবার প্রতি কেজিতে দুই টাকা বাড়ানো হয়েছে। ৭ মে টু ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান কেনা চলবে।

মৌলভীবাজার ও বড়লেখার হাওড়পাড়ের বোরোচাষি শাহীন আহমদ, নিমার আলী, হযরত আলী, রমজান আলী ও হাবিব মিয়া জানান, অধিকাংশ কৃষক ঋন করে বোরো চাষ করেছেন। ফসল বিক্রি করে তা পরিশোধ করবেন। ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গেই পাওনাদারদের চাপ বেড়ে যায়। তখন লাভক্ষতির দিকে না চেয়ে তারা ধান বিক্রি শুরু করেন। খাদ্য বিভাগ ৩২ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে আরও বেশ কয়েকদিন পর। কিন্তু কৃষক বাধ্য হয়ে ২২-২৫ টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। তারা আরও জানান, আগাম বন্যার আশঙ্কায় কৃষক এপ্রিলের শুরু থেকেই হাকালুকিতে আধাপাকা ধান কাটা শুরু করেন। ধান কাটা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে তারা মাঠেই কম দামে ধান বিক্রি করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, এবার হাকালুকি হাওড়ে বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে হাওড়ের প্রায় ৮৫ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। নানা সমস্যায় অনেক কৃষক মাঠেই ধান বিক্রি করছেন। তবে কম দামে বিক্রির বিষয়টি জানা নেই।

শেয়ার করুন:

Recommended For You