শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেছেন, বাংলাদেশে টেকসই ও দায়িত্বশীল শিপ রিসাইক্লিং (জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ) অনুশীলনে এসইএনএসআরইসি (SENSREC) প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মূল স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে বাংলাদেশকে হংকং কনভেনশন প্রতিপালন ও মেনে চলার ক্ষেত্রে এটি উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিচ্ছে।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের সুরমা হলে শিল্প মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) এর যৌথ উদ্যোগে একটি সচেতনতামূলক কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘SENSREC Phase-III’ প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত “Workshop and Knowledge Management on Hong Kong International Convention” শীর্ষক দুই দিনব্যাপী (২৪-২৫ এপ্রিল) এ সচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শামীমুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন (Espen Rikter-Svendsen) ও আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও)’র ডিপার্টমেন্ট অভ পার্টনারশিপ এন্ড প্রজেক্ট (ডিপিপি) এর প্রকল্প সমন্বয়ক John Alonso (জন আলোনসো)। স্বাগত বক্তৃতা করেন ‘Safe Environmentally Sound Ship Recycling in Bangladesh (SENSREC) Phase-III’ প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) সঞ্জয় কুমার ঘোষ।
জাকিয়া সুলতানা বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার মাধ্যমে এসইএনএসআরইসি (SENSREC) প্রকল্প দেশে টেকসই জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের উদ্বুদ্ধ করেছে। জাহাজের নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব রিসাইক্লিংয়ের জন্য হংকং আন্তর্জাতিক কনভেনশন বাস্তবায়নের প্রেক্ষাপটে আমরা SENSREC Project Phase-III থেকে এ সংক্রান্ত আইনি বিষয় এবং আইনগত সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ইয়ার্ডসমূহে Treatment Storage and Disposal Facility (TSDF) প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আশা করি।
তিনি আরও বলেন, হংকং কনভেনশন জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের সময় যাতে মানব স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা পরিবেশের জন্য অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি সৃষ্টি না করে সেটি নিশ্চিত করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কর্তৃক গত ১৪ জুন ২০২৩ তারিখে হংকং কনভেনশন অনুসমর্থন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় মানদণ্ড পূর্ণ হওয়ার ২৪ মাস পর অর্থাৎ ২৬ জুন ২০২৫ থেকে এটি কার্যকর হবে৷
জাকিয়া সুলতানা বলেন, কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ হংকং কনভেনশন অনুসমর্থন ও প্রতিপালনের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি করেছে তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় ৷ অনুষ্ঠানে সিনিয়র শিল্প সচিব বলেন, সচেতনতামূলক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা পারস্পরিক আলোচনা ও সহযোগিতা বিনিময়ের মাধ্যমে দায়িত্বশীল শিপ রিসাইক্লিং অনুশীলনে আমাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে আরও গভীর ও সমৃদ্ধ করবে। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই আমরা হংকং কনভেনশন প্রতিপালনের পাশাপাশি টেকসই, দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব শিল্প ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করতে পারি।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, টেকসই ও দায়িত্বশীল শিপ রিসাইক্লিং অনুশীলনে হংকং কনভেনশন ২০০৯ একটি সুদূরপ্রসারী মাইলফলক। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে পরিবেশবান্ধব শিপ রিসাইক্লিং অনুশীলন এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, সকল অংশীজনদের ঐক্যবদ্ধ ও সম্মিলিত প্রয়াস এবং সর্বোত্তম অনুশীলনের মাধ্যমেই কেবল আমরা এটি নিশ্চিত করতে পারি।
কর্মশালায় বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ), আইএমও, আইএলও, জাইকা, শিল্প মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ, বুয়েট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণ অংশগ্রহণ করেন।