কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের নির্মাণাধীন রাঙ্গালীকুটি ব্রিজের স্লাব ঢালাই নিয়ে দ্বন্দের জেরে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে প্রধান মিস্ত্রিসহ ঠিকাদারের লোকজনের বিরুদ্ধে। এসময় এক কর্মসহকারীকে আটকে রাখে মিস্ত্রির লোকজন। পরে পুলিশ এসে ওই সহকারী ও তার মটরসাইকেল উদ্ধার করে।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে ওই ব্রিজের স্লাব ঢালাইয়ে কথা ছিলো। এ উপলক্ষে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান, কর্মসহকারী শ্যামল কুমার কুন্ড, তপন কুমার সরকার ও লিটন মিয়া কাজ তদারকিতে আসেন। কাজ শুরুর আগে স্লাব জয়েন্টের বিশেষ পাতের পুরুত্ব ১০ মিলিমিটারের পরিবর্তে ৫ মিলিমিটার দেয়ার অভিযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় লোকজন ঢালাই বন্ধ রাখতে বলেন। এসময় উপ-প্রকৌশলী আতাউর রহমানসহ তার তিনজন কর্মসহকারী মিস্ত্রিকে ঢালাইয়ের অনুমতি না দিয়ে ফিরতে চাইলে তাদের বাঁধা দেন ঠিকাদারের সাইড ম্যানেজার জুয়েল, প্রধান মিস্ত্রি সবুজ মিয়া ও তার সহযোগী মিস্ত্রিরা।
এসময় উভয় পক্ষের বাকবিতন্ডার একপর্যায় প্রকৌশলীকে কিলঘুষি,লাথী মারতে থাকেন মিস্ত্রি সবুজ মিয়াসহ তার সহযোগীরা। একপর্যায় তাদের চারজনকে আটকিয়ে রাখেন তারা। এসময় প্রকৌশলী আতাউর রহমান অসুস্থ্ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসা দিয়ে উপজেলায় পাঠান স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। এদিকে কর্মসহকারী শ্যামল কুমার ও তপন কুমার সেখান থেকে সটকে পড়লেও মটরসাইকেলসহ আটকে পড়ে কর্মসহকারী মিলন মিয়া। পরে কচাকাটা থানার পুলিশ এসে মটর সাইকেল সহ মিলন মিয়াকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কর্মসহকারী শ্যামল কুমার কুন্ড জানান, ঢালাই শুরুর আগে স্লাবের বিশেষ জয়েন্টের পাতের পুরত্ব নিয়ে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় আমরা ফিরতে চাইলে মিস্ত্রি ও ঠিকাদারের লোকজন আমাদের পথ রোধ করে দাড়ায় এবং অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এসময় আমাদের উপর কিলঘুষির ঘটনাও ঘটে।উপসহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান জানান, প্রধান মিস্ত্রি সবুজ মিয়ার নেতৃত্বে স্থানীয় বেশ কিছু মিস্ত্রি তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেছে। তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন।
অভিযুক্ত প্রধান মিস্ত্রি সবুজ মিয়া মারপিটের ঘটনার কথা অস্বীকার করে জানান, একটু ধাক্কা ধাক্বি হয়েছে মাত্র। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও জয়েন্টের পাত না থাকায় ওই প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করে দিয়ে গেছেন। সেদিন আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আজ তাদের পরামর্শে ৫মিলিমিটার পাত লাগানো হয়েছে। সেই পাতের পুরুত্ব কম হওয়ায় স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ভুলে বারবার কাজ বন্ধ রাখলে আমাদের অনেক টাকা ক্ষতি হয়। জনগণকে বুঝিয়ে ঢালাই শুরু করতে তাদের পথ আটকানো হয়েছিলো মাত্র।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) বিশ্বদেব রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা হবে। জানা যায়,২০২০-২১ অর্থবছরে টেন্ডার হওয়া ৮২ মিটারের গার্ডার ব্রিজটির কাজ পেয়েছে যশোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড। পরে এটি সাব কন্ট্রাক্ট নেয় লালমনির হাটের পাটগ্রামের রফিকুল ইসলাম। স্থানীয় সরকার বিভাগের এই ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা।