ফেনীতে বিনাভোটেই উপজেলা চেয়ারম্যান পাচ্ছেন পরশুরাম-ফুলগাজীবাসী

আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগেই বিনাভোটেই চেয়ারম্যান পাচ্ছেন ফেনীর পরশুরাম-ফুলগাজী উপজেলাবাসী।এর মধ্যে পরশুরামে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ার‌ম্যানের তিনটি পদেই ভোট নির্বাচিত হচ্ছেন।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন

সোমবার (২২এপ্রিল) মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী প্রার্থীরা সকলেই আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্বা ফিরোজ আহাম্মদ মজুমদার, এই পদে গত ৩ বারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার, বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হামেম চৌধুরী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সাবেক সদস্য এম সফিকুল হোসেন মহিম ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদন্ধিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এই পদে চারজন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য নজরুল ইসলাম রিটু, শ্র্রমিক লীগের সভাপতি আবদুর রসুল, বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরামুল করিম চৌধুরী রোববার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন।

একই ভাবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামছুন নাহার পাপিয়া বিনা প্রতিদন্ধিতায় আবারো নির্বাচিত হচ্ছেন। এই পদে সাবেক উপজেলা আওয়ামালীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম এনামুল করিম মজুমদার বাদলের সহধর্মীনি নিলুফা ইসলামিন মজুমদার তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

পরশুরাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া সব প্রার্থীরা সকলে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বীরমুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ মজুমদারের সাথে যে দুইজন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন তারা সবাই ফিরোজ মজুমদারের শীষ্য তাই তাদের রাজনৈতিক গুরু ফিরোজ মজুমদারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্ধিরাও সবাই দলীয় তাই তারা তাই তারা নিজেরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একজনকে সমর্থন দিয়েছেন।

পরশুরাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার তাঁর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ফিরোজ মজুমদার রাজনৈতিক জীবনে আমার গুরু আমি তার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্ধিতা করার ইচ্ছা পোষণ করায় আমি তাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

পরশুরাম উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটানিং অফিসার তানজিদা ইয়াসমিন জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনটি পদে বিনা প্রতিদন্ধিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।তারা হলেন চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্বা ফিরোজ আহাম্মদ মজুমদার, ভাইস চেয়ারম্যান এম সফিকুল হোসেন মহিম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামছুন নাহার পাপিয়া। অপরদিকে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল আলিম। এর আগে রবিবার (২১ এপ্রিল) বিকালে উপজেলা সদরের বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

আলিম বলেন, “আলিম-হারুনের কারনে অসন্তোষ সৃষ্টি হলে কর্মীরা কষ্ট পাবে। আমাদের মধ্যে কখনো কথাকাটাকাটি হয়নি। দু’জনই একই দল করি। এখানে জামাত-বিএনপি থেকে কেউ আসেনি। দুইজন প্রার্থী হওয়ায় কর্মীরা দুইভাগ হয়েছে। মাঠের অবস্থা কারো চেয়ে কেউ কম নয়। কিন্তু কর্মী কিন্তু একই। আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম এমপি ও নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি রাজনৈতিক সুশৃঙ্খলতার জন্য আমাদের নিয়ে বসেছেন। তাদের সিদ্ধান্ত মেনে আমি প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে হারুনকে চেয়ারম্যান হিসেবে জয়যুক্ত করার জন্য কাজ করবো। আগামীদিনে হারুন মজুমদারের সমর্থনে মিলেমিশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো।”

তিনি বলেন, “আলিম-হারুন দুই ভাইয়ের মধ্যে কোন অমিল নাই। কোন কর্মী কাউকে কটাক্ষ করবেন না। এ ধরনের আচরণ থেকে সবাই বিরত থাকবেন। সকলের মধ্যে সহনশীল আচরন করতে হবে।” হারুন মজুমদার তার বক্তব্যে বলেন, “আমার কারনে আবদুল আলিম মজুমদার কখনো অসম্মানিত হবেন না। প্রতিহিংসার রাজনীতি কখনো করিনা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভেদ সৃষ্টি করার কোন সুযোগ নেই। আমরা সবাই একই দলের লোক।”

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হাজী জামাল উদ্দিন, উপজেলা সহ-সভাপতি মাহবুবুল হক কালা, আবদুছ ছালাম, মাস্টার সাইফুল ইসলাম, সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম, উপজেলা আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব সাকের, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সালেহ আহম্মদ মিন্টু, সাধারন সম্পাদক একরাম পাটোয়ারী, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির ইয়ামিন, সাধারন সম্পাদক ফারুক হোসেন বাপ্পি প্রমুখ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ।

প্রসঙ্গত,নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনাপ্রতিদন্ধিতায় নির্বাচিত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল ও ৮ মে ভোট গ্রহণের কথা ছিল।

শেয়ার করুন:

Recommended For You