দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৬ ডিগ্রি

বৈশাখের শুরু থেকেই কখনো মৃদু আবার কখনো মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে। কিন্তু চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে এ জেলার তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। টানা ৯দিনের ব্যবধানে আবারও তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণীকূল।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সূর্যের তাপ। তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশে। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। বিশেষ করে নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না। ছন্দপতন ঘটছে দৈনন্দিন কাজকর্মে।

ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন

শহরের হাসান চত্বর এলাকার ফল ব্যববসী হারুন ও করন আলী বলেন, প্রচণ্ড গরমে মানুষ অতিষ্ঠ। দোকানে আসছে না ক্রেতারা। ঠিকমতো বেচাকেনাও হচ্ছে না। তার ওপর প্রচণ্ড সূর্যের উত্তাপে ফুটপাথে বসে থাকাও যাচ্ছে না। বৈশাখের শুরু থেকেই যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করাই দায়। একদিন কেনাবেচা না করতে পারলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। ইজিবাইক চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, গরমে শহরে মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। তাই ভাড়াও ঠিকমতো হচ্ছে না। রাস্তা থেকে আগুনের আঁচ উঠছে। অতিরিক্ত গরমে গা ঘেমে শরীরে বসে যাওয়ায় জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোকসহ রোগবালাই বেড়েই চলেছে। শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এই আবহাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শক মো. আবুল হোসেন বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট ও হৃদ্রোগীর চাপ বেড়ে চলেছে। হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে অন্তত দুবার গোসল করা, খাবার স্যালাইন, সাধারণ পানিসহ তরল খাবার বেশি বেশি খাওয়া, চা-কফি-কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা, ঘরের ভেতর বা ছায়াশীতল পরিবেশে অবস্থান করার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে ছাতা মাথায় বের হতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, মার্চ মাসের প্রথম দিন থেকে গ্রীষ্মকাল গণনা শুরু হয়। জেলায় চলতি বছরের মার্চ মাসের ৩১ দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে ৩০ মার্চ ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০ মার্চ ২২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের মার্চে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৬ দিনে জেলায় গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৬ দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের তুলনায় তাপমাত্রা এ বছর কম হলেও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে তিনি আরও বলেন, এরকম পরিস্থিতি আরও ২-১ দিন বিরাজ করতে পারে। এরইমধ্যে এখনই বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।
শেয়ার করুন:

Recommended For You