‘আমাদের দেশ থেকে নির্বাচন নির্বাসনে চলে গেছে। নির্বাচন নামটার জায়গায় এখন নির্বাচন না বলে নির্বাসন কথাটা বলাই ভালো, বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র এম নাসের রহমান।
সোমবার (১৫ই এপ্রিল) বিকেলে বাহারমর্দান নিজ বাড়ীতে জেলা বিএনপি’র আয়োজিত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থকদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। নাসের রহমান বলেন, কারণ বিএনপি’র পক্ষে দেশের জনগণের নব্বই পারসেন্ট ভোট থাকলেও কোনো লাভ নেই।
বিগত সংসদ নির্বাচনে আমার নিজ নির্বাচনী এলাকায় মৌলভীবাজার- রাজনগরের মানুষ ভোটই দিতে যায়নি অথচ একেকটা ইউনিয়নে দেখি ২২ হাজার ২৩ হাজার ২৪ হাজার ২৫ হাজার ভোট দেখানো হয়েছে। কি সুন্দরভাবে সাজিয়ে কমবেশি করে রাজনগরের ৮টি ইউনিয়নে ২১ থেকে ২৫ হাজারের ভেতরে ভোট দেখানো হয়েছে। অথচ ভোটেরদিন সব ভোট সেন্টার খালি ছিল। সাধারণ ভোটারের উপস্থিতি নাই বললেই নয়। এ চিত্র শুধু মৌলভীবাজার- রাজনগরের নয়, দেশের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় দেখা গেছে। মানুষরা সেন্টারে ভোটদিতে যায়নি। একদলীয় প্রহসনের ভোট দেশের মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে নিরবে অত্যন্তঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে৷ তবুও তারা তাদের দলদাস নির্বাচন কমিশন দিয়ে অবৈধ এমপি বানিয়ে অবৈধ দখলদার সরকার গঠন করে দেশ শাসন করে যাচ্ছে। এইভাবে আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটা পুরো পুরি আওয়ামী লীগ বিনস্ট করে দিয়েছে।
নাসের রহমান বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারিতেও যদি নির্বাচন হয়; কথার কথা ওই একই অবস্থা হবে। কারণ ইন্ডিয়া শেখ হাসিনা’কে ক্ষমতা থেকে সরাতে দেবে না। একমাত্র ইন্ডিয়ার সহায়তায় জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের মাথার ওপর এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় চেপে বসে আছে।তিনি বলেন,বিএনপি যাতে নির্বাচনে না আসে সে জন্য কমপ্লিটলি মিলিটারি স্টাইলে দেশে একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। বিএনপি মহাসচিব, স্ট্যান্ডিং কমিটির শীর্ষ নেতাসহ সকল পর্যায়ের নেতাদের জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। আর ভারতের সেবাদাস এ গণবিচ্ছিন্ন অবৈধ দখলদার সরকার সারা দুনিয়াকে বলেছে বিএনপি নির্বাচনে আসছে না।
জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান আরও বলেন, এদেশে আমরা বেসিকেলি একটা গুন্ডাতন্ত্রের আন্ডারে বাস করছি। আর এই গুন্ডাতন্ত্রকে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ আর মিছিল করে সরানো যাবে না। নাসের বলেন,একজন মানুষের যদি টাইফয়েড হয় মাথা ব্যাথার ঔষধ খেয়ে লাভ হবে না। টাইফয়েড হলে টাইফয়েডের ঔষধই খেতে হবে। তিনি বলেন, স্বৈরতন্ত্রকে সরাতে গেলে গনতান্ত্রিক আন্দোলন করে লাভ হবে না। কারণ চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনি। গুন্ডায় গনতন্ত্র বুঝে না। গুন্ডায় ডান্ডা বুঝে।গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক সময় দলকে বিপ্লবী হতে হয়।
নাসের রহমান বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা গাড়ি পোড়ায়নি গনতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে গনতান্ত্রিক আন্দোলন করেছে। আর যানবাহনে গাড়ি আওয়ামী লীগ পুড়িয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়েছে।
নাসের রহমান আরও বলেন, শেখ হাসিনা ইন্ডিয়াকে সাথে নিয়ে তাদের নিজারার মধ্যে ইলেকশন করে একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যামে আবারও রাস্ট্রের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রেখেছে। এ সরকার সম্পূর্ণ অবৈধ। ২০১৪ সালেও বিনা ভোটের নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছিল । সে নির্বাচনে বিএনপিসহ রাজপথের কোন বিরোধীদল কেউই নির্বাচনে যায়নি। একই ঘটনা এই ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে পুনরাবৃত্তি হয়েছে। দেশে গনতন্ত্রের নামে পুরোপুরি একটা গুন্ডাতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে। এদের কে মিছিল মিটিং করে সরানো যাবে না। গোন্ডায় গনতন্ত্র বুঝে না। ডান্ডা বুঝে। গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনে বিপ্লবী হতে হবে। তবে বিএনপি তো বিপ্লবী দল নয় একটা উদার গনতান্ত্রিক দল।
ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, সহ সভাপতি আশিক মোশাররফ, মো. হেলু মিয়া ও শওকতুল ইসলাম শকু। অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি বদরুল আলম, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.ফখরুল ইসলাম,সহ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কৃষকদলের সভাপতি শামীম আহমেদ,জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো.ইদ্রিছ আলী,জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রসিক, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক জনি আহমদসহ জেলা সদর ও বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি, ছাত্রদল,যুবদল, শ্রমিকদল,কৃষক দল,জাসাস,মহিলা দল,ওলামাদলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।