বাংলাদেশে সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় শত্রু বিএনপি-জামাত: শেখ পরশ

বাংলাদেশে সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় শত্রু বিএনপি-জামাত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ পরশ।

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে রবিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে আগানগর মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা জেলা শাখার উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সম্মানিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদ এমপি। সভাপতিত্ব করেন-ঢাকা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান (জিএস মিজান), সঞ্চালনা করেন-যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুদ আহমেদ, হাজী এইচ এম সেলিম, এরফান উদ্দিন আহমেদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা জেলা যুবলীগকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন ঈদ উপহার দিয়ে। তিনি ইফতার পার্টির পরিবর্তে আমাদেরকে সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন ইফতার সামগ্রী নিয়ে গরিবদের মাঝে বিতরণ করতে। অথচ দেখবেন বিএনপি-জামাত বিভিন্ন ৫ তারকা হোটেলে বড়লোকদের নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ইফতার পার্টি করে বেড়াচ্ছে। আপনাদের ঈদ নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নাই। ওদের আর আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে এই পার্থক্য। এমন গণমানুষের নেত্রী হওয়া সত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে, সেটা এ দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এদেশের মেহনতি-কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় আমাদের অসম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন-আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে উনমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং দূরদর্শীসম্পন্ন সিদ্ধান্ত। দলীয় প্রতীক পাওয়া নিয়ে কোন অন্তরদ্বন্দ্ব, অসুস্থ প্রতিযোগিতা বা প্রতিহিংসার এখানে কোন সুযোগ থাকবে না। যে জনপ্রিয় সেই জিতে আসবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জনপ্রিয়তাও যাচাই হয়ে যাবে। বিভিন্ন গ্রুপিং এবং তদবিরবাজির কারণে যে সকল নেতারা প্রকৃত মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হয়, তারাও ন্যায্য সুযোগ পাবে তাদের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করার এবং নিজেকে তুলে ধরার। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-আমাদের লক্ষ্য অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আমরা কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা চাই না। বিশৃঙ্খলা এবং হট্টগোল সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। যুবলীগের কেউ যদি নির্বাচন সংক্রান্ত কোন প্রকার সংঘাতে জড়িত হয় তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন-মনে রাখতে হবে, একাত্তরের পরাজিত শক্তি, পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসরদের সামনে একমাত্র বাধা জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে ছলে-বলে-কৌশলে দুর্বল করতে পারলেই পরাজিত শক্তির উত্থান হতে পারে। সেকারণে এই সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের এক পরিকল্পিত নীলনকশার বাস্তবায়ন চলছে। এই নীলনকশার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে বিএনপি-জামাতের মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার। তিনি বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যে বলেন-“ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার”। বিএনপি হচ্ছে সেই নিধিরামদের দল। শক্তি নাই, সমর্থ নাই বড় বড় কথা। শক্তি-সামর্থ্য নাই বলে নির্বাচন ঠেকাতে পারে নাই। আন্দোলনেও বাতাস পাচ্ছে না, জমাতে পারছে না। এখন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে তাদের অনেক দুশ্চিন্তা। আমি শুধু তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এদেশে যতদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বেঁচে আছেন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপনাদের মত একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসরদের দুশ্চিন্তার কারণ নাই। “কুমিরের কান্না” দিয়ে এ দেশের মানুষকে ধোঁকা দেবার চেষ্টা করবেন না। বাংলাদেশে সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় শত্রু বিএনপি-জামাত।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি বলেন-আপনারা গত ৭ জানুয়ারি বিএনপি-জামাতের দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করেছেন এজন্য আপনাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি বলেন-সম্প্রতিকালে আপনারা দেখছেন করোনার মহামারিতে বিএনপি-জামাত আপনাদেরকে এক মুঠো চাল দেয়নি, অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। ঈদের সময় তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। তারা আছে কিভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ক্ষতিগ্রস্থ করা যায়, কিভাবে দেশের মানুষের ক্ষতি করা যায়, কিভাবে দেশের ক্ষতি করা যায় সেই ধান্দায়। অথচ আমরা দেখেছেন করোনার সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঔষধ নিয়ে, খাদ্য, চিকিৎসা সেবা, ফ্রি অক্সিজেন, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয় বন্যা, জলোচ্ছ্বাস যে কোন সমস্যায় যুবলীগের নেতা-কর্মীদের আপনাদের পাশে পাবেন। এটাই শেখ হাসিনার যুবলীগ; এটাই মানবিক যুবলীগ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ম.ই. মামুনসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You