
চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম ব্যবসাকেন্দ্র বিপনীবিতান, চট্টগ্রাম শহরের প্রথম তৎকালীন সুন্দর বহুতল মার্কেট এটা তাই এটাকে বিপণিবিতান নামের চেয়ে নিউমার্কেট নামেই বেশি পরিচিতি। স্বাধীনতার আগে থেকে এটিই চট্টগ্রামের সবচেয়ে ভিআইপি বৃহত্তম বাজার।
পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে জমজমাট বাণিজ্য হয় এই মার্কেটে। বিশেষ ও ভালো ব্রান্ডসহ নামিদামি কাপড়, জুতা, জুয়েলারীর জন্য বিখ্যাত চট্টগ্রাম শহরে। রোজার অন্তত এক মাস আগে জেলা ও আশপাশের উপজেলার উচ্চবিত্ত ক্রেতাদের ভিড় জমে এখানে। করোনা পরিস্থিতি ছাড়া অন্যান্য বছরের চিত্র একই রকম হলেও এবার চিত্র ভিন্ন বলছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের আনাগোনা কম হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের কপালে।
তাদের আশঙ্কা, অন্যান্য বছরের সেই জৌলুস হয়তো তারা হারাতে বসেছেন। কারণ হিসেবে বলছেন, দ্রব্যমূল্যসহ জীবনযাত্রায় ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ। মানুষের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে খেয়ে বেঁচে থাকাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই বিলাসী পণ্য বা প্রয়োজন ছাড়া কেনাকাটা করছেন না।
জানা গেছে, দেশি-বিদেশি কাপড়ের জুতা কসমেটিক জুয়েলারি ব্যাগ ইলেকট্রিক সামগ্রীর জন্য বিখ্যাত শত বছরের পুরনো বিপনীবিতান বা নিউমার্কেট । এখানে ছোট-বড় প্রায় সবকিছু সব বয়সের পণ্য পাওয়া যায়।
চারতলা বিশিষ্ট এই মার্কেটে পাচঁশতাধিক দোকান রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের দেশি কাপড়সহ সবকিছু পাওয়া যায়; তাই ক্রেতারা যুগ যুগ ধরে ছুটে আসেন এখানে। শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রিপিস, শার্টপিস, প্যান্ট জুতা কসমেটিক জুয়েলারি কিনতে আসেন দেশের নানা প্রান্তের খুচরা বিক্রেতারা। ঈদকে ঘিরে কুমিল্লা, নোয়াখালী, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের ভিড় জমান। এবার ঈদে বিক্রির জন্য ভারত, পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড থেকেও ব্যবসায়ীরা কাপড় এনেছেন।
আজ রবিবার রাতে নিউমার্কেট ঘুরে দেখা গেছে অন্যান্য বছরের চেয়ে ভিন্ন চিত্র। প্রতিবছরের মতো ক্রেতার কোন ভিড় নেই বললেই চলে।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, প্রতিবছর এক মাস আগে থেকে নিউমার্কেটে ক্রেতার ভিড়ে মুখর হয়ে ওঠে চারতলা বিশিষ্ট এই বিপণিবিতান। গত বছরের তুলনায় এবার বেচাবিক্রি অনেকটা কম। মার্কেটের একটি রেডিমেড কাপড়ের দোকান মালিক বলেন, নিত্যপণ্যের সঙ্গে বেড়েছে কাপড়ের দামও। সব মিলিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। মানুষের পকেটে টাকাও নেই ঈদের আনন্দও নেই তাই।
পটিয়া উপজেলা থেকে আসা ক্রেতা মাসুম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় খুচরা বাজারে কাপড়ের বেচাকেনা একেবারে কম। আমিও পরিবারের সবার জন্য এখনো কাপড় কিনতে পারিনি। এছাড়া আরও কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর নতুন জামাকাপড় কিনবেন কি-না এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।