কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুইজনের বিরুদ্ধে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের সংগঠনের দাবিকৃত চাঁদার টাকা পরিশোধ না করায় ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালের ডাক্তার ভিজিটে বাধা ও কোম্পানির বকেয়া টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন, ভৈরব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান।
ক্লিনিক মালিকদের এমন আচরণে ৩০মার্চ, শনিবার থেকে শহরের ৩৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ঔষধ সাপ্লাই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়া । তবে সাধারণ মানুষের যেন সমস্যা না হয়, সেজন্যে তারা অন্যান্য ফার্মেসী ও সরকারি হাসপাতালে তাদের কাজ অব্যহত রেখেছেন।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়ার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগটি ভৈরব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান কবির অস্বীকার করেছেন। এবিষয়ে তারা কেউ ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
অভিযুক্ত সভাপতি হাজী মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান কবির জানান, রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলা ও রোগীর ভীরে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করাসহ কয়েকটি অভিযোগ এনে চারটি ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে সংগঠনের আওতাধীন ৩৪টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যেন ডাক্তার ভিজিট, অর্ডার ও আর্থিক লেনদেন না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ওনার্স এসোসিয়েশন প্রত্যেক হাসপাতালে নোটিশ টানিয়েছেন। এ ঘটনার সাথে চাঁদা চাওয়া না চাওয়ার কোন সম্পর্ক নেয়। তাদের কাছে কখনো কেউ কোন টাকা পয়সা চাননি বলে দাবি করেন এ হাসপাতাল মালিক সংগঠন।
ডব্লিউজি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন
ফারিয়া ভৈরব শাখার সভাপতি পায়েল মুন্সি ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সহ বিক্রয় প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, ভৈরব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবিরের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস, এরিস্টো ফার্মা ও সোমাটেক ফার্মার প্রতিনিধিকে ভৈরবের সমস্ত ক্লিনিক ও হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয় এবং ডাক্তার ভিজিট করতে বাধা নিষেধ দেয়া হয়। কোম্পানির ঔষধ বিল চাওয়ায় টাকা দিতে অস্বীকৃতি ও হুমকির শিকার হয়েছেন তারা।
এঘটনার প্রতিবাদে ৩০ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হাসপাতাল মালিক সংগঠনের আওতাধীন সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডাক্তার ভিজিট, নতুন অর্ডার নেয়া ও পুরাতন অর্ডারের ঔষধ ডেলিভারি থেকে বিরত থাকাসহ সকল ধরনের ঔষধ সাপ্লাই বন্ধের ঘোষণা দেন। তারা শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতাল এবং খোলা ফার্মেসিগুলোতে ফারিয়ার প্রতিনিধিরা কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। এবিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান না হলে তারা মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
ভৈরব ফারিয়ার সভাপতি আল আতিক (পায়েল মুন্সি) জানান, এঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বড় এমাউন্টের টাকা না দেয়ার জেরে তারা ডাক্তার ভিজিট করা সহ অর্ডার দেয়া নেয়া ও বকেয়া টাকা পরিশোধ না করার জন্য হাসপাতাল মালিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত নোটিশ লাগিয়ে দিয়েছেন প্রত্যকটি হাসপাতালে। কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিধিরা বাধা নিষেধ ও হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। বর্তমানে বেসরকারি হাসপাতাল ভিজিটে প্রত্যকটি বিক্রয় প্রতিনিধি নিরাপত্তা জনিত আতংকে রয়েছেন। তাই পুরো বিষয়টি ভৈরবের আওয়ামীলীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ মন্ত্রী মহোদয়ের আস্থাভাজন ব্যক্তিবর্গদেরকে জানানো হয়েছে সঠিক সমাধানের জন্য। তাদের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানান ফারিয়ার সভাপতি।
ভৈরব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অভিযুক্ত সভাপতি হাজী মোশাররফ হোসেন ও অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবিরের সাথে স্বাক্ষাত করে অভিযোগের বিষয়ে তাদের বক্তব্য নিতে চেষ্টা করলেও তারা কেউ ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তারা শুধু বলেছেন নোটিশের কথা গুলোই তাদের বক্তব্য। এর বাহিরে কোন কথা নেয় তাদের। চাদার অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেন তারা।