বিদেশী কোন প্রভুর ইন্ধনে ভারত বিরোধিতা করছে বিএনপি: শেখ পরশ

বিদেশী কোন প্রভুর ইন্ধনে ভারত বিরোধিতা করছে বিএনপি মন্তব্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সৃষ্টি হয়েছিল জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের জনগণের সাথে আওয়ামী লীগের নাড়ির সম্পর্ক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ২৪ বছর জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে এদেশের মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য। সেকারণে এদেশের জনগণকে আমরা সবসময় আমাদের সাথে পাই।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর ২টায়, উত্তরা-১২নং সেক্টর কল্যাণ সমিতি মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উপহার (খাদ্য ও বস্ত্র) বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শেখ ফজলে শামস্ পরশ-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা-১৮ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী এমপি। সভাপতিত্ব করেন- মুজিবুর রহমান বাবুল, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর। সঞ্চালনা করেন-মোঃ ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর।
এসময় তিনি বলেন, এদেশের জনগণ চরম বিপদের সময় আওয়ামী লীগের পাশে ছিল এবং থেকে আসছে। ২০০১ সালের পর শত অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যার রাজনীতি করেও ওরা নৌকার ভোটারদের টলাতে পারে নাই। এই সংগঠনের ভিত্তি অনেক শক্ত। তিনি বলেন-জনগণ থাকে সেই সকল রাজনৈতিক দলের সাথে যারা দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, দেশকে গড়ার স্বপ্ন দেখায়। আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দেশকে গড়ার স্বপ্ন বুকে ধারণ করে, তাই আওয়ামী লীগের সাথে এই দেশের মানুষ আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার যোগ্যতা রাখে। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনা একনাগাড়ে চারবার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছে।
এই যোগ্যতা অর্জন করতে হলে মানুষকে ভালবাসতে হয়, দেশের মানুষের প্রতি সহমর্মী হতে হয়, দুর্নীতি পরিহার করতে হয়, এই যোগ্যতা অর্জন করতে হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতা প্রদর্শন করতে হয়। দক্ষতা নাই বলে নেতিবাচক রাজনীতির দিকে বিএনপি ধাবমান। তাই ওরা দেশকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এই  স্বাধীনতার মাসে ওরা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে, কিন্তু অন্যদিকে খোজ নিয়ে দেখবেন তাদের বেগম সাহেবরা ভারত যাচ্ছে ঈদের শপিং করতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেই ভারত আমাদের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, আমাদের অস্ত্র দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছে তাদের এখন বিরুদ্ধাচারণ করছে। নিশ্চয়ই অন্য কোন বিদেশী শক্তির উস্কানি এবং প্রতিশ্রুতিতে এই অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। কিন্তু লাভ হবে না, বেঈমানদের কেউই বিশ্বাস করে না, ইতিহাসও ক্ষমা করে না। স্বার্থ হাসিল করে ছুড়ে ফেলে দেবে, ক্ষমতায় বসাতে পারবে না যতদিন জনগণ শেখ হাসিনার সাথে আছে।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-আমাদের সামনে অনেক কাজ। আমাদের প্রধান কাজ, জনগণের পাশে থাকা। শেখ হাসিনা যেই রাজনৈতিক মানদণ্ড স্থাপন করেছেন সেটা অনুসরণ করতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার সাথে গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যেতে হবে। আমাদের আগামীতে এই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কোন জনবিচ্ছিন্ন সুশীল সমাজের পূর্ব-নির্ধারিত সুশাসনের সংজ্ঞা দ্বারা আমাদের পরিচালিত হতে হবে না। আমাদের সুশাসনের সংজ্ঞা জননেত্রী শেখ হাসিনা রচিত করেছেন ইতোমধ্যে, সেটা হচ্ছে মানবিকতা, ন্যায়পরায়ণতা ও স্বচ্ছতা। আজকে ওরা হত্যা, জেল-জুলুমের কথা বলে, আওয়ামী লীগ ২১ বছর সব ধরণের নির্যাতন সহ্য করেছে। হত্যার শিকার হয়েছে, বাড়ি-ঘর আগুন দিয়েছিল, জেলা-জুলুম কোন কিছুই বাদ ছিল না। ২১ বছর পর ১৯৯৬ তে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে বিজয় মিছিলও করে নাই যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এই সংযমের প্রতিদান কি পেয়েছি আমরা? ২৫ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী সমর্থকদের হত্যা করেছিল ওরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারী-শিশু নির্যাতন করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আদলে।
বিএনপি-জামাত সরকার এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল, আর শেখ হাসিনা সরকার জঙ্গিবাদ এদেশ থেকে নির্মূল করে দিয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রতি রাতে সেনা কর্মকর্তাদের বিনা বিচারে ফাঁসি দেয়া হত। এভাবে আড়াই হাজার সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। আজকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে গঠিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র চাচ্ছে। যাদের জন্মের মধ্যেই গণতন্ত্র নাই, তারা গণতন্ত্রের কথা বলছে। ওদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার মাধ্যমে। একজন স্বৈরাশাসকের পকেট থেকে যে দলের সৃষ্টি তারা গণতন্ত্র চাচ্ছে। তাদের জন্মটা কোথায় এবং কিভাবে হয়েছে, তারা কি ভুলে গেছে?
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক অ্যাড. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকতসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
শেয়ার করুন:

Recommended For You