আইয়ুবের আমলের দোতলা বাড়িটি রায়পুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ হাওলাদার বাড়িতে অবস্থিত আইয়ুব খান আমলের দোতলা টিনের বাড়িটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন বহন করে। ১৯৫৮ সাল থেকে টিনশেড দোতলা বাড়িটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আইয়ুব খান আমলের তৈরি বাড়িটিতে লুকিয়ে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর এ বাড়িটি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ হাওলাদার বাড়িতে অবস্থিত।
মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো এই বাড়িটি দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। দোতলা এই বাড়ির ভেতরে রয়েছে অপূর্ব কারুকাজ। প্রাচীন এই বাড়ির চারপাশে আছে সৌন্দর্যের ছোঁয়া।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন
জানা যায়, ১৯৫৮ সালে রচিমউদ্দিন হাওলাদার পার্শ্ববর্তী জেলার চাঁদপুরের চরভৈরব থেকে উঠে এসে এই দোতলা টিনের বাড়িটি নির্মাণ করেন। তৎকালীন তার ছোট ছেলে হাজী মফিজুর রহমান হাওলাদার বাড়িটির কিছু অংশ সংস্করণ করে বসবাস করেন।
জানতে চাইলে এই বাড়ির উত্তরাধিকারী তাহসীন হাওলাদার বলেন, বাড়িটি আইয়ুব খান আমলে করা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন এই বাড়িটিতে মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের কমান্ডার এজাজ ডেপুটি কমান্ডার রহমান ও ডেপুটি কমান্ডার রফিকসহ অজানা আরও ১০ থেকে ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা এই ঘর ও আমাদের বাড়ির আরেকটি ভবনে থেকেছেন ও খেয়েছেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের বাড়ির এই ঘরগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের শেষের কয়েক মাস ছিলেন। তারা দিনে থাকতেন এবং রাতে অভিযানে বের হতেন। ঘরটিতে তারা সশস্ত্র অবস্থায় থাকতেন। আমার দাদা উনাদের খাওয়া ও থাকার দায়িত্বে নিয়েছিলেন। আমার পরিবার মুক্তিযোদ্ধা নয় কিন্তু তাদের সাহায্যকারী। আজীবন এই মধুর স্মৃতি আমাকে আনন্দে ভাসাবে যে এই দেশ স্বাধীন করতে আমার পরিবারের ন্যূনতম অবদান ছিল।
দোতলা বাড়িটি দেখতে আসা জাবেদ ও মাসুম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি রায়পুর উপজেলার উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের মধ্যে আছে, তা অনেকের অজানা। এই বাড়িতে প্রাচীন নিদর্শন ও স্থাপনা এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা সুমন হাওলাদার বলেন, ‘প্রাচীন স্থাপত্যটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষী হয়ে আছে। বাড়িটিকে সংস্থার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাই।’
আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কাউন্সিল এর আহ্বায়ক মামুন বিন জাকারিয়া  বলেন, ‘আমাদের দাবি, এ বাড়িটি লক্ষ্মীপুরের প্রাচীন স্থাপত্যগুলোর তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানুক।
রায়পুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইউএনও নাজমা বিনতে আমিন বলেন, আমি যেহেতু বিদায় নিচ্ছি পরবর্তী ইউএনও বিষয়টি ইতিহাসের অংশ হিসেবে সংযুক্ত করে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর ব্যবস্থা করবেন আশা করি।
শেয়ার করুন:

Recommended For You