ভৈরবে বলগেটের ধাক্কায় ভ্রমণতরী ডুবে নিহত এক, নিখোঁজ ৮

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে বালুভর্তি বলগেটের ধাক্কায় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার (ভ্রমণতরী) ডুবে গেছে। দুর্ঘটনার পর অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এখনো ভৈরব হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ আটজন নিখোঁজ রয়েছেন। ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরব সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নিচে দুর্ঘটনাটি ঘটে।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে ভৈরব সেতু এলাকা মেঘনা নদীর পাড় থেকে ১৬জন যাত্রী নিয়ে আশুগঞ্জ সোনারামপুর চরে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে ভৈরবে ফেরার পথে মাঝ নদীতে পর্যটনবাহী নৌকাটিকে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দিলে নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন ও নৌ পুলিশ ৯/১০ জনকে উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অজ্ঞাত নামা একজন মহিলাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং তোফাজ্জল হক (২২) নামের এক যুবককে আহত অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করেছেন।

নিখোঁজ যাত্রীরা হলেন ভৈরব হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মো. সোহেল রানা (৩০), তার স্ত্রী মৌসুমি (২৫), মেয়ে মাহমুদা (৭), ছেলে রাইসুল ইসলাম (৫), ভৈরবের আমলাপাড়া এলাকার আরাদ্ধা দে (১১), কটিয়াদী উপজেলার মানিকখালী এলাকার বেনন দে (৫৫), নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার দড়িকান্দি এলাকার আনিকা আক্তার (১৯) ও অজ্ঞাত এক নারী (৩৫)। দুর্ঘটনার পর অজ্ঞাত এক নারী (৪০) লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজের মধ্য যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলো, ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল (৩০) এবং তার স্ত্রী আনিকা বেগম? ২০) ও দুই সন্তান। এছাড়া নিখোঁজ আনিকা বেগমের বাড়ী নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার নারায়নপুর এলাকার দড়িকান্দি গ্রামে। তাছাড়াও ভৈরব শহরের আমলাপাড়া গ্রামের বেনন দে, রুবা দে ও আরদে নিখোঁজ হন।

সুন্দরবন ভ্রমণতরীর মালিক নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ বিশ বছর ধরে ভৈরব থেকে আশুগঞ্জ চরে যাত্রী পারাপার করেন। আজ সন্ধ্যায় সোনারামপুর চর থেকে ভৈরব ব্রীজের নিচে ফেরার পথে একটি বাল্কহেড তার নৌকায় পিছনে ধাক্কা দিলে মাঝ নদীতে ১৬জন যাত্রী নিয়ে নৌকা ডুবে যায়।

ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সাজু মিঞা জানান, নৌকা ডুবির ঘটনায় ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল, তার সস্ত্রী ও দুইসন্তানসহ ৬জন নিখোঁজ রয়েছে। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ নদীতে ট্রলারটি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছে।

নৌ পুলিশ কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের এএসপি হুমায়ুন কবীর আকন্দ জানান, মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ সোনারামপুর চরে থেকে পর্যটক বাহী নৌকা ভৈরবে আসার পথে বাল্কহেডের ধাক্কায় দিলে সুন্দরবন নামে ভ্রমণতরী ডুবে যায়। এ ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল সোহেল, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ ৮জন নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় খবর পেয়ে নৌ পুলিশ নদী থেকে কয়েকজন যাত্রীকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে একজন মহিলা মারা গেছে। নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের উদ্ধারের জন্য নৌ পুলিশ নদীতে রয়েছে। অভিযুক্ত বাল্কহেডটি আটকের জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।

শেয়ার করুন:

Recommended For You