ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশি জাহাজ ও এর ২৩ নাবিককে জিম্মির ৮ দিন পর মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ অনুসরণ করুন
আজ বুধবার (২০ মার্চ) তারা যোগাযোগ করেছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। তিনি জানান, জলদস্যুরা যোগাযোগ শুরু করেছে। আলোচনার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই দফা স্থান পরিবর্তন করে জাহাজটিকে সবশেষ সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করে রাখা হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
আরও পড়ুন জাহাজ ও নাবিকদের বিপদমুক্ত করাই লক্ষ্য : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের ‘জোরপূর্বক’ উদ্ধারে প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী। এছাড়াও অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সোমালিয়ার পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী। তবে তাদের এমন পদক্ষেপের কঠোর বিরোধিতা করেছে এমভি আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। তারা এ সংকটের সমাধান চান সমঝোতার মাধ্যমে।
আরও পড়ুন স্ত্রীর কাছে নাবিকের বার্তা : টাকা না দিলে আমাদের এক এক করে মেরে ফেলবে
অন্যদিকে অভিযানের প্রস্তুতির খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে তা বন্ধ করতে নাবিকদের ওপর চাপ দিচ্ছে দস্যুরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশের সিনিয়র নাবিক ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান জানান, গত দুইদিন আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী এমভি আবদুল্লাহকে বেশ চাপের মুখে রেখেছে। যুদ্ধজাহাজগুলো এমভি আবদুল্লাহ’র দেড় মাইলের মধ্যে অবস্থান নিয়েছে। ফলে জলদস্যুরা জাহাজের নোঙর তুলে আরও ভেতরে চলে গিয়ে তীরের মাত্র দেড় মাইল দূরে নোঙর করেছে। জলদস্যুরা এটাও বলেছে যে, বাড়াবাড়ি করলে জাহাজ তীরে তুলে দেবে। তবে দুই নৌবাহিনী এখনো বিভিন্নভাবে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে।
আরও পড়ুন সোমালিয়ার দস্যুদের কবলে বাংলাদেশি জাহাজ, জিম্মি ২৩ নাবিক
তিনি আরও জানান, নৌবাহিনীর চাপে নাবিকদের এখন ২৪ ঘণ্টাই জাহাজের ব্রিজে অবস্থান করতে হচ্ছে। এছাড়া মাঝেমধ্যে ভিএইচএফ (ওয়াকি টকি) ব্যবহার করে নৌবাহিনীকে অনুরোধও জানাতে হচ্ছে যেন কাছে না আসে।
আরও পড়ুন দ্রুততম সময়ে নাবিক ও জিম্মি জাহাজ মুক্ত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।