ফেনী সদর উপজেলায় একটি রাস্তার মাটি কেটে ও নিয়ে ইট সরিয়ে বাঁশের বেড়া ও কাঁটা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন এক জমির মালিক। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জামাল কাজী বাড়ীর ৫০টি পরিবার। তাদের প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা–যাওয়া করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
চলতি মাসের প্রথম রমজানের দিন ওই ইউনিয়নের বাদামতলী নামকস্থানে ৩০ বছরের পুরোনো চলাচলের রাস্তা কেটে বাঁশ ও কাটা দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে রাখায় গত ৬দিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে ৫০ পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষ। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের জামাল কাজী বাড়ীর চলাচলের পুরোনো তিনশত ফুট রাস্তার ২০ ফুট রাস্তা কেটে মাটি সরিয়ে নেয় এবং কাটা অংশে কাঁটা গাছ ও দুপাশে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এতে রমজান মাসে ওই বাড়ির মানুষ হাটবাজারে, হাসপাতালে, প্রাত্যহিক কাজ ও বয়োবৃদ্ধ মানুষরা মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারছে না। এছাড়াও স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। তারা চরম কষ্টে দিন পার করছে।
আরও পড়ুন: ফেনী মহাসড়কে মেয়রের ইফতার সামগ্রী বিতরণ
ওই বাড়ীর বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার পেয়ার আহমেদ জানান, আমাদের একই বাড়ীর লোকমান ড্রাইভার থেকে ১০ বছর পর্বে ৬ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে যার মধ্যে এক শতাংশ সম্পত্তি এ বাড়ীর চলাচলের পথের জন্য ব্যবহায় হয়ে আসছিলো। ওই সম্পত্তি বিক্রির সময় বারবার লোকমান ড্রাইভার এক শতাংশ বাদ দিয়ে রেজিষ্ট্রি করতে চাইলেও কাগজে রেকর্ড করা ছয় শতাংশ সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করেন একই বাড়ীর কবির আহমেদের ছেলে মাঈন উদ্দিন।
ওইসম্পত্তি বিক্রির সময় লোকমান ড্রাইভারকে পাঁচ শতাংশ সম্পত্তির মূল্য পরিশোধ করেন ক্রেতা তবুও ছয় শতাংশ দাবি করে প্রথম রমজানের দিন হঠাত কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই অনেকগুলো লোকজন এনে বহুবছরের পুরোনো রাস্তা প্রায় ২০ ফুট কেটে জমির সমান করে ফেলে। শুধু তাই নয় ওই কাটা জায়গায় কাটা গাঁছ ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে রমজানের মাসে চরম কষ্টে দিন পার করছে বাড়ির বাসিন্দারা।
একই বাড়ির নজরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ বছর ধরে বাড়ির শতশত নারী পুরুষ এ পথে চলাচল করে এসেছে। বিনানোটিশে কিংবা কোন ধরনের কথা ছাড়াই গায়ের জোরে রাস্তাটি কেটে নেওয়ায় স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী ও শিশুরা এক ধরনের গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ জানান, এটি একটি অমানবিক ও মানব গর্হিত কাজ। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগস্থ বাড়ির লোকজনের সাথে কথা বলেছেন।
ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন বলেন, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, যেহেতু এ সড়কে দীর্ঘ বছর ধরে ওই বাড়ির লোকজন চলাচল করেছে সেহেতু রাস্তাটি না কেটে উভয়পক্ষ সমঝোতার মধ্য দিয়ে সমাধান করা যেতো। এছাড়া রমজান মাসে এভাবে চলাচলের পথ কেটে ওই পথে কাটা দিয়ে ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার বিষয়টি মানবিক মনে হয়নি। বিষয়টি যখন আদালতের বিষয় বিবাদী পক্ষ বলেছে সেহেতু সার্বিক বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে ন্যায় বিচার প্রাপ্ত হবে। এ বিষয়ে জানতে মাঈন উদ্দিন এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি।