নতুন প্রজন্মকে রোজা থেকে দূরে রাখার কৌশল করছে সরকার: চরমোনাইর পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সারাদিন রোজা রেখে ইফতার করার আনন্দই আলাদা। ইফতারও ইবাদত, ইফতার ইসলামের সৌন্দর্য। এখন দেখছি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইফতার মাহফিল নিষিদ্ধ করে নতুন প্রজন্মকে রোজা থেকে দূরে রাখার কৌশল অবলম্বন করছে সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল নিরীহ ছাত্রদের ইফতার মাহফিলে ছাত্রলীগ আক্রমন করে রক্তাক্ত করেছে রোজাদার ছাত্রদের। এটা ভাল লক্ষণ নয়। আমি আশা করব, রোজাদার ছাত্রদের উপর হামলাকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে। অন্যথায় রোজাদার মুসলমানরা নিরবে বসে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী ইফতারে নিরুৎসাহিত করছেন কেন, তা না করে দুর্নীতি বন্ধ করতে বলেন, বিদেশে পাচারককৃত অর্থ দেশে আনলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাবে।

ইসলামী আন্দোলনের আমীর আরও বলেন, বর্তমান বিশ্বের দ্রুত গতির জীবনধারা, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের সৌন্দর্যের যে ব্যাপ্তি তৈরি হয়েছে, মানবসভ্যতার বিকাশে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলাম এক শান্তিপূর্ণ ধর্ম। এ ধর্মের প্রতিটি নির্দেশ ও আমলের পেছনে যেমন রয়েছে আধ্যাত্মিকতা, ঠিক এর বিপরীতে রয়েছে বিজ্ঞানময় ব্যাখ্যা। ইসলামে যেসব বিধিবিধান সরাসরি মানুষকে সংযত, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক চেতনা ও প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করে, মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা তথা রোজা তার মধ্যে অন্যতম। রমজান পালন আধ্যাত্মিকতা, ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের আত্ম-উন্মেষের আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করে। রমজান ইসলামিক চন্দ্র ক্যালেন্ডারের নবম মাস। এই মাসটি বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করে, তবে এর প্রাসঙ্গিকতা ধর্মীয় সীমানা ছাড়িয়ে সমসাময়িক বিশ্বের জন্য অমূল্য আধ্যাত্মিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

রমজান মাস পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস, ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাস, বিজয়ের মাস। মুসলমানের দ্বীন ও দুনিয়ার সমৃদ্ধি, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক উন্নতি, দৈহিক ও মানবিক শ্রেষ্ঠত্ব আর গৌরব ও মর্যদার অবিস্মরণীয় স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে মাহে রমজান। ব্যক্তিগত এবং সামাজিকভাবে সর্বত্র আল্লাহর দ্বীনের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় যাবতীয় প্রতিকুলতার মুখে টিকে থাকার জন্যে যে মানসিকতার প্রয়োজন, সিয়ামের সাধনার মধ্যেই তা অর্জিত হয়। মানবতার মহান নেতা রাসূল সা. ও তাঁর বিপ্লবী সাহাবারা এ মহান মাসে লড়াই করেছিলেন বাতিলের বিরুদ্ধে, অন্যায় অসত্য, জুলুম ও শোষণের বিরুদ্ধে এবং মানুষের ওপর মানুষের প্রভুত্ব খতম করার মহান লক্ষ্যে সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে মানব জাতিকে মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের আহ্বান জানায় এ মাসে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, রমজান মাসে রোজাদার মানুষকে যারা কষ্ট দেয়, তারা প্রকৃত মানুষ নয়। বেশি মুনাফার আশায় যারা নিত্যপণ্যের বাজারে সঙ্কট সৃষ্টি করে মানুষকে কষ্ট দেয়, তারা মানুষ নামের পশু। এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। তিনি রোজাদার মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবে সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।

আজ সোমবার সকালে বরিশালের চরমোনাই মাদরাসা ময়দানে ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ তালিম তারবিয়াতের ৩য় দিনের আলোচনায় পীর সাহেব চরমোনাই উপরোক্ত কথা বলেন। আরো বয়ান পেশ করেন নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই ছাড়াও চরমোনাই দরবারের খলিফাগণ বিশেষ বয়ান করে থাকেন।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You