ভৈরব উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, মাঠ গোছাচ্ছেন প্রার্থীরা

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় বইছে নির্বাচনের আমেজ। প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের অনেকে প্রার্থী। বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে কোনো ঘোষণা না দিলেও দলের কেউ কেউ ভোটে অংশ নিতে প্রচার শুরু করেছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীর নেই কোন তৎপর। জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে ভৈরব উপজেলা একটি উপজেলা। গেল উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি কোন প্রার্থী না থাকায় নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
রোজার আগে উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাথমিক ঘোষণা এসেছে নির্বাচন কমিশন থেকে। এর পর থেকে ভৈরবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেরা প্রাথমিক প্রচার হিসেবে ফেসবুকে ‘দেখতে চাই’ ঘরানার প্রচারণায় নেমেছেন। ‘দেখতে চাই’ প্রচারণা কেবল চেয়ারম্যান পদে সীমাবদ্ধ নেই, ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা ও পুরুষ উভয় পদে একই কায়দায় প্রচারণায় সরব রয়েছেন প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকেরা। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চাওয়া ব্যক্তিদের দলীয় পরিচয় বেশীরভাগই আওয়ামী লীগ। তবে ফেইসবুক ও পোস্টার ফেস্টুনে প্রচারণায় রয়েছে বিএনপির দুই নেতা। প্রচারণায় আসা প্রার্থীর সমর্থকদের প্রথম টার্গেট দলীয় মনোনয়ন নিজের পক্ষে আনা।
আসছে ভৈরব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কর্মিবান্ধব জননেতা জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু ভাইকে চেয়ারম্যান হিসেবে ‘দেখতে চাই’, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ পোস্টার ফেস্টুনে এমন প্রচারণায় সরব একদল মানুষ। আবার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়েও নিজের প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আবার একইভাবে কেউ কেউ চেয়ারম্যান পদে দেখতে চান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুরকে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামানকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চেয়ে ফেসবুকে সরব আরেকটি পক্ষ। প্রচারণায় রয়েছে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বুলবুল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি ও ভৈরব প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান বাচ্চু, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক অলিউল ইসলাম অলি, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সভাপতি আল-মামুন।এছাড়াও প্রচারণায় রয়েছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরিফ রহমান আরিফ।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা জানা গেছে, এই উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সায়দুল্লাহ মিয়া শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। তিনি প্রবীণ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। অসুস্থতার কারণে এক বছর ধরে দলে এবং উপজেলা পরিষদে খুব বেশি সময় দিতে পারছেন না। এমন বাস্তবতায় ধারণা করা হচ্ছে, মো. সায়দুল্লাহ মিয়া এবার হয়তো নির্বাচনে প্রার্থী না-ও হতে পারেন। ফলে দলের অন্য নেতারা চেয়ারম্যান হতে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে দেখতে চাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে সমর্থকেরা প্রচারণায় রয়েছেন গত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা  বিষয়ক সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অরুন আল-আজাদ,  উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য শহীদুল্লাহ কায়সার, উপজেলা সেচ্চাসেবকলীগ নেতা আনোয়ার পারভেজ,কাজল মিয়া ও বাক্কি মিয়া।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম, সানজিদা ইয়াছমিন,সাবিহা মাহবুব প্রভা, মোমিনা বেগম। প্রচারণায় সরব রয়েছেন তাঁদের সমর্থকেরা।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম বাকী বিল্লাহ ও সম্পাদক আতিক আহমেদের ভাষ্য, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তাই যার যার মতো প্রার্থীরা তাদের নির্বাচন করতে আগ্রহী।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মো.জাকির হোসেন কাজল জানায়,এবারের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকার সম্ভাবনা বেশী। তাই এই সুযোগে অনেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছে।  আর দলীয় সমর্থনের ব্যাপারে দলীয় নেতা কর্মীরা ছাড়াও স্থানীয় সাংসদ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের দিক নির্দেশনায় নির্বাচনে সমর্থন করা হবে।
শেয়ার করুন:

Recommended For You