দেশজুড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্যের কাছে আত্মসমর্পণ করে পদত্যাগ করেছেন হাইতির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি।
হেনরির উপদেষ্টা জিন জুনিয়র জোসেফ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য। হাইতি আমেরিকা মহাদেশের ক্যারিবীয় অঞ্চলভুক্ত দেশ। ক্যারিবীয় অঞ্চলের ২৫টি দেশের আঞ্চলিক চোট দ্য ক্যারিবিয়ান কমিউনিটি অ্যান্ড কমন মার্কেটের (ক্যারিকম) চেয়ারম্যান ও গায়ানার প্রেসিডেন্ট ইরফান আলি অবশ্য সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই পদত্যাগের আভাস দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অ্যারিরেয়ল হেনরির পদত্যাগ সময়ের ব্যাপার মাত্র। হাইতির পরবর্তী অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে পদত্যাগ করবেন তিনি। তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর হাইতির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতি তার পদত্যাগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়।
সাংবিধানিকভাবে যথাসময়ে নির্বাচনের আয়োজন এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা থাকলেও হেনরি তা করেননি। এদিকে তার আমলে হাইতিতে প্রভাব বাড়তে থাকে সশস্ত্র গ্যাংগুলো। বর্তমানে হাইতি কার্যত নিয়ন্ত্রণ করছে একাধিক সশস্ত্র গ্যাং। গত সপ্তাহে রাজধানী পোর্ট-ওউ-প্রিন্সের একটি কারগারে হামলা চালিয়ে ৩ হাজার ৪০০ কয়েদিকে মুক্ত করে দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। তারপর থেকে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে ২৭ হাজার ৭৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির প্রায় সব অঞ্চলে। দেশের এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিতে গত সপ্তাহে কেনিয়ায় গিয়েছিলেন ৭৪ বছর বয়সী অ্যারিয়েল হেনরি। সেখানে হাইতির আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে কেনিয়া পুলিশের ১ হাজার সদস্যকে হাইতিতে আনার জন্য আলোচনাও করছিলেন তিনি।
বর্তমানে অবস্থান করছেন ক্যারিবীয় সাগর তীরবর্তী স্বায়ত্ত্বশাসিত মার্কিন ভূখণ্ড পুয়ের্তো রিকোতে। তার পদত্যাগের পর হাইতির নতুন সরকারের প্রধান কে হবেন তা এখনও অনিশ্চিত, তবে ধারণা করা হচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম নেতা গাই ফিলিপ এই পদে আসবেন। মুদ্রা পাচারের অভিযোগে মার্কিন সরকার হাইতির এই নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছিল নির্বাসন দিয়েছিল। পুরো হাইতির সড়ক-মহাসড়কে এখন নিয়মিত টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্যাংয়ের সদস্যরা।
সূত্র : সিএনএন