
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের অভ্যন্তরে মাহে রমযান উপলক্ষে ইফতার মাহফিল করা যাবে না বলে প্রজ্ঞাপন জারির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা জারি ধর্মীয় অনুভুতিতে চরম আঘাত। এ নিষেধাজ্ঞা মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। এধরনের নিষেধাজ্ঞা দেশে নতুন সঙ্কট সৃষ্টি করবে। হযরত শাহজালালের পূণ্যভুমিতে এধরনের নিষেধাজ্ঞা ইসলামী জনতাকে ভাবিয়ে তুলেছে। মাহে রমাযানের সাথে ইফতার এবং ইফতার মাহফিল ওতঁপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ইফতার মাহফিল নিষেধাজ্ঞা প্রকারন্তরে রোজা নিষিদ্ধের শামিল। তিনি অবিলম্বে এ প্রজ্ঞাপণ তুলে নেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় রমাযান মাসে বদরী চেতনায় মুসলমানরা ময়দানে আন্দোলন গড়ে তুলবে।
সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, আলহাজ হারুন অর রশিদ, মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিন, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা খলিলুর রহমান।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, নিত্যপণ্য নিয়ে জনগণের সাথে তামাশা করছে ডামি সরকার। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে মন্ত্রীরা গরিব মানুষ নিয়ে উপহাস করছেন। তিনি বলেন, হাজার বছরের ঐতিহ্য ইফতার খেজুর দিয়ে শুরু করা। সুন্নত নিয়ে এধরনের মন্তব্য শিল্পমন্ত্রীর ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচায়ক। তিনি সরকারকে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন- রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে অশ্লীলতা বেয়াপনা নিয়ন্ত্রণ ও দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালে রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। মজুদদার, মুনাফাখোর ও সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এদের দমন করতে হবে। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এদিকে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও নগ্নতা বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজ ১১ মার্চ সোমবার সারাদেশে জেলায় ও মহানগরে মাহে রমাযানকে গুরুত্ব দিয়ে সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে স্বাগত মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কোন কোন জেলা প্রশাসনের বাধাঁর মধ্য দিয়ে মিছিল পালন করে। যে সকল জেলায় একযুগে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রায়েছে, ঢাকা জেলা দক্ষিণ, ঢাকা জেলা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর জেলা, গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ মহানগর, ময়মনসিংহ উত্তর, মোমেনশাহী দক্ষিণ, রাজশাহী মহানগর, রাজশাহী জেলা, জয়পুরহাট, বগুড়া, পাবনা পূর্ব, পাবনা পশ্চিম, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, চট্টগ্রামপূর্ব, চট্টগ্রাম পশ্চিম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী উত্তর, নোয়াখালী দক্ষিণ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা মহানগর, কুমিল্লা উত্তর, কুমিল্লা দক্ষিণ, কুমিল্লা পশ্চিম, বি-বাড়ীয়া, খুলনা মহানগর, খুলনা জেলা, ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইল, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, রংপুরমহানগর, রংপুর জেলা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর উত্তর, দিনাজপুর দক্ষিণ, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, পিরোজপুর, বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী।
স্বাগত মিছিল পূর্ব সমাবেশগুলো থেকে জেলা নেতৃবৃন্দ বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন ‘রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে না’ অথচ তার ঘোষণার আগেই সরকার দলীয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বুর্জোয়া গোষ্ঠী শবে বরাতের আগেই বহুগুণ বাড়িয়ে জনগণকে নিষ্পেষণ করছে। বাণিজ্যমন্ত্রী এ সিন্ডিকেট ভাংতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তারা রোজাদার সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিকভাবে খেয়ে যেন রোজা পালন করতে পারে সে ব্যাপারে কার্যকরি উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২৭ থানায় স্বাগত মিছিল অনুষ্ঠিত : এদিকে দেশব্যাপী ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২৭ থানায় স্বাগত মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পল্টন, শাহবাগ, নিউ মার্কেট, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, চকবাজার, কোতয়ালী, বংশাল, সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুর, কদমতলী পশ্চিম, কদমতলী পূর্ব, যাত্রাবাড়ী পূর্ব, যাত্রাবাড়ী পশ্চিম, ডেমরা উত্তর, ডেমরা দক্ষিণ, মুগদা, খিলগাঁও, সবুজবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী থানা শাখা পৃথক পৃথক স্বাগত মিছিল বের করে। এসব মিছিলগুলো থেকে নেতৃবৃন্দ বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর মত বাংলাদেশেও নিত্যপণ্যের দাম কমানোসহ রোজাদারদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা চালু করা এবং রমজানের পরিবেশ রক্ষার্থে সকল প্রকার অশ্লীলতা বেহায়াপনা বন্ধ রাখতে হবে। সেইসাথে যানজট নিরসন এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাসের ব্যবস্থা করতে হবে।