ডিএনএ রিপোর্টে শনাক্ত হলো অভিশ্রুতির পরিচয়

রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে নিহত গণমাধ্যমকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রি ওরফে বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে তার বাবা সবুজ শেখ ওরফে শাবলুল আলম এবং মা বিউটি খাতুন। শনিবার (৯ মার্চ) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে তার পরিচয় শনাক্ত হয়। 

গতকাল রোববার (১০ মার্চ) সিআইডি থেকে ওই প্রতিবেদন থানায় পাঠানো হয়েছে।সিআইডি ডিআইজি (ফরেনসিক) এ কে এম নাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টি খাতুনের বাবা-মা দাবিদার সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুনের কাছ থেকে ডিএনএ নমুন সংগ্রহ করা হয়েছিল। পাশাপাশি নিহত নারীর মৃতদেহ থেকেও ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়। তা সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ ও মা বিউটি খাতুন। ডিআইজি নাহিদুল বলেন, রোববার ওই ডিএনএ প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করে তা থানায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ বাবা-মা দাবিদারের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলা হয়েছে।

ডিএনএ শনাক্তের পর তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে নিহতদের মধ্যে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী হিসেবে পরিচিত সাংবাদিকদের পরিচয় নিয়ে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। ফলে লাশ হস্তান্তরের সময় দেখা দেয় জটিলতা।

কর্মস্থল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী হিসেবে পরিচিত হলেও মৃত্যুর পর জানা যায় তার আসল নাম বৃষ্টি খাতুন। জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের প‌শ্চিমপাড়ায়। কলেজের সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনেও তার নাম বৃষ্টি খাতুন। বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত বৃষ্টির বাবা মরদেহ গ্রহণ করতে গেলে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

রমনা কালী মন্দির কমিটির সভাপতি উৎপল সাহা জানান, নিয়মিত পূজা করতে মন্দিরে যেতেন অভিশ্রুতি। নিজেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী হিসেবেই পরিচয় দিতেন। এমন পরিস্থিতিতে লাশ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। এপরপর তার ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়। ১১ দিন পর পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায় তার পরিচয়।

অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে থাকা ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার ডিএনএ নমুনা মিলেছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের এই শিক্ষার্থী নজরুল ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির (পাইপ ও ফিটিংস) মালিক নজরুল ইসলামের চার ছেলের মধ্যে দ্বিতীয়।

মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, “মরদেহ শনাক্তের বিষয়ে সিআইডি এখনো আমাদের কোনও কিছু জানায়নি। ডিএনএ যদি শনাক্ত হয় তবে অবশ্যই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।”

শেয়ার করুন:

Recommended For You