কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র এক বিশেষ অভিযানে চাকরির ভুয়া যোগদানপত্র প্রদান ও ভুয়া এন্টিক, পয়সা-পিলারসহ প্রতারক চক্রের ৬ সদস্য আটক হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলার মডেল থানাধীন সার্কিট হাউজের পাশে তিন রাস্তার মোড় নামক এলাকাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা শাখার এক বিশেষ অভিযানিক দল।
অভিযুক্তরা নিজেদের বিভিন্ন ডিফেন্স বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ও ভুয়া যোগদানপত্র পাঠিয়ে এবং পুলিশ সদস্য পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ জালিয়াতি করে হাতিয়ে নিতেন। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও স্বীকার করেন যে; তারা আদিম যুগের পুরাতন পয়সা, ভুয়া এন্টিক পিলার ও তক্ষক(সাপ) বিষয়ে প্রতারনা করতেন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলাসহ আশেপাশের জেলার বিভিন্ন এলাকাতে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-
১.কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতখালী দাঁড়ের পাড়া গ্রামের মৃত হাসেম উদ্দীনের ছেলে সাবেক সেনা সদস্য উল্লেখ্য প্রতারনা সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য রাশিদুল ইসলাম মিলন (৩৩)। ২.দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ বড় মসজিদ পাড়া এলাকার মাহাতাব আলীর ছেলে মফিজুল ইসলাম মামুন। ৩.দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া ফারাকপুর গ্রামের আনোয়ারুল হক মুকুলের ছেলে মাহমুদুল হাসান শিশির (৩২)। ৪.দৌলতপুর দাড়ের পাড়া এলাকার মৃত আমানুল্লার ছেলে সোহেল রানা (৪০)। ৫.কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা গ্রামের জগত আলী মন্ডলের ছেলে রেজাউল ইসলাম (৫২)। ৬.ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভায়না উত্তরপাড়া গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে জামাল উদ্দিন (৩২)।
জানা গেছে, প্রতারিত লোকজন টাকা দেওয়ার পর চাকরিতে নিয়োগ না পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা না দিয়ে নানান টালবাহানা করে ও বিভিন্নভাবে ক্ষতি করাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো। এই চক্রের হোতা রাশিদুল ইসলাম মিলন বিভিন্ন ব্যাক্তিকে সাজিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক পরিয়ে কথিত উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বানিয়ে ভাইভা নিতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাদের কাছ থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র, জালিয়াতির ও প্রতারনা করার কাজে ব্যবহৃত পয়সা সহ অন্যান্য সামগ্রী পাওয়া গেছে বলে জানায় অভিযানিক দল। গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় প্রতারনার মামলা রুজু হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাহফুজুল হক চৌধুরী পিপিএম জানান, আমাদের কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার স্যার এর নির্দেশনা ও বিশেষ তত্ত্বাবধানে উল্লেখিত ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জন আসামিকে ধৃত করা হয়েছে। অপরাধী প্রতারক চক্র যত বড় বা যেই হোক, কোনো ছাড় দেওয়া হবেনা। প্রতারক চক্র যত বড়ই শক্তিশালী হোক না কেনো এদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইন প্রয়োগ করা হবে।