ফেনীর এমপি নাসিম চৌধুরী বলেছেন, আমি গত কয়েকদিন ভোর বেলায় বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় ঘুরে একটি বিষয় লক্ষ্য করেছি এলাকার বেশির ভাগ লোকজন তাদের বাচ্ছাদেরকে নূরানী মাদ্রাসায় পাঠিয়েছেন। তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে অভিভাবকেরা বলেন দু -তিন বছর ক্লাস বাচ্ছারা নূরানী মাদ্রাসায় পড়ালেখা শেষ করলে তার পর স্কুল মাদ্রাসায় ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিবেন। কিন্তু এতে তাদের বাচ্চারা লাইনচ্যুত হচ্ছেন প্রকৃত জ্ঞান অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বাচ্চাদেরকে ইসলাম ধর্ম বিজ্ঞান কম্পিউটার অংক সব বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করে ইহকাল ও পরকালের জন্য কাজ করতে হবে। একটি এলাকায় ঘুরলে দেখা যায় ১০ টি নূরানী মাদ্রাসা ৫ কিন্ডারগার্ডেন করেছে। এতে কারো ব্যবসা হচ্ছে কিন্তু তারা সন্নতানদের ভবিষ্যত নষ্ট করছে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এলাকায় শিক্ষাব্যবস্থার এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে একটি এলাকার চার ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকলে সমাজের ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। কিন্ডার গার্ডেনের নামে ইংলিশ শিখাচ্ছে অথচ তারা ইংলিশের ই ও জানেনা।
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, মানহীন কিন্ডারগার্ডেন ও নুরানী মাদ্রাসা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে এইসব প্রতিষ্ঠান দিয়ে একশ্রেণীর লোক ব্যবসা করছে এতে কিছু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হলেও মানহীন শিক্ষা ব্যবস্থায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। আমি অভিভাবকদের বলবো আপনাদের চিন্তা করার সময় এসেছে আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনাকে বেছে নিতে হবে।
নাসিম চৌধুরী আরো বলেন, অতীতে যারা পড়ালেখা করেছে তারা মক্তবে পড়েও ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করেছে শুধু যে নূরানী মাদ্রাসায় পড়ালেখা করলে প্রকৃত মুসলমান হবে তা কিন্তু না মাদ্রাসায় ও স্কুলে পড়ালেখা করেও একজন শিশু প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আনন্দঘন পরিবেশে উপজেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দীনি প্রতিষ্ঠান সুবার বাজার ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার শত বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শততম বছর পূর্তি উদযাপন করেন মাদ্রাসার শিক্ষক ও প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে শতবছর পূর্তি উদযাপনের কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির উদ্দেশ্যে লেখা মানপত্র পাঠ করেন মাদ্রাসার ইংরেজি প্রভাষক মহিউদ্দিন চৌধুরী। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ পরিচালনা কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের মঙ্গল কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন গুথুমা চৌমুড়ি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মাওলানা বদিউজ্জামান।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর, মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি হাজী মো. মোস্তফা মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা নূর মুহাম্মদ, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য গোরফানুল করিম মজুমদার নান্টু, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাস্টার আবুল কাশেম, মির্জানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাস্টার আব্দুর রাজ্জাকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক, মির্জানগর ইউনিয়নের সকল মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গভর্নিং বডির সদস্য ছাড়াও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। শত বছর উদযাপনকে ঘিরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রসহ প্রায় ছয় হাজার মানুষের মিলনমেলা ঘটে।