ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফি সমন্বয়ের দাবিতে পৃথক পৃথক মানববন্ধন করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (০২ মার্চ) সকালে ফি সমন্বয় নিয়ে লুকোচুরির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে মানববন্ধন শেষে পৃথক পৃথক স্বারকলিপি প্রদান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বরত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াকে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো- সমন্বয়ের ঘোষণা দেওয়া ফি সমূহ অবশ্যই সমন্বয় করতে হবে, ইতোমধ্যে যারা অতিরিক্ত ফি জমা দিয়েছে তাদের টাকা মাস্টার্সে সমন্বয় করতে হবে এবং বিভিন্ন ফি দেওয়ার পরেও একাডেমিক শাখার খাতায় না তোলার বিষয় সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। স্মারকলিপিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীবৃন্দ৷ ২০১৯ সালে তৎকালীন প্রশাসন শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে অযাচিত বর্ধিত ফি ২০ শতাংশ কমানোর ঘোষনা দেন ও যারা ইতোপূর্বে ফি জমা দিয়েছিলো, তাদের ফি পরবর্তী সেমিস্টারে সমন্বয় করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন৷
সেই ঘোষণার পর থেকে উক্ত দুই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা সমন্বয় করে ফি জমা দিয়ে আসছে৷ কিন্তু প্রশাসনে রদবদল হওয়ায় পূর্বের প্রজ্ঞাপনের তোয়াক্কা না করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস পূর্ণাঙ্গ ফি প্রদান পূর্বক সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্র উত্তোলন করার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন। অন্যথায় সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন। যা উক্ত দুই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার সামিল বলে স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়৷ এ বিষয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষিত ফি কেন সমন্বয় হচ্ছে না সে ব্যপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করছি৷
এদিকে শিক্ষার্থীদের ফি সমন্বয় বাস্তবায়ন ও প্রশাসনের অন্যায্য ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। শনিবার (২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলমের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট, ইবি সংসদের সহ-সভাপতি উদয় দেবনাথ, সাদিয়া মাহমুদ মীম, দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আহমাদ গালিবসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২০ শতাংশ ফি কমানোর আশ্বাস দেয় তৎকালীন প্রশাসন। তবে ওই দুই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে সনদ উত্তোলন করতে গেলে পুনরায় বকেয়া ফি জমা দেওয়ার দাবি জানান কতৃপক্ষ। যা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিক।’
ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফি সমন্বয় তো করেনি, উপর্যুপরি শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে ২০১৯-২০ সেশন থেকে অন্যায্য ভাবে ফি বাড়িয়েছে, যা অত্যন্ত অমানবিক আচরণ। অনতিলম্বে ফি সমন্বয় বাস্তবায়ন এবং অন্যায্য ফি প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাচ্ছি। যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি সমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন না করেন তাহলে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বরত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সবার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বিষয়টির সমাধান করা হবে।