পশ্চিমারা ইউক্রেনে সৈন্য পাঠালে তা পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর কাছে থাকা অস্ত্র পশ্চিমা দেশগুলোতে আঘাত হানতে সক্ষম। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার পার্লামেন্টের সদস্য ও অন্যান্য অভিজাত নেতাদের সামনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পশ্চিমারা রাশিয়াকে দুর্বল করার দিকে ঝুঁকছে। পশ্চিমা নেতারা রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাদের হস্তক্ষেপ কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা বোঝেন না। সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইউক্রেনে ইউরোপের স্থল সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে করা এক মন্তব্যের বিপরিতে পারমাণবিক যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন এই সতর্কতা করেছেন। যদিও ম্যাক্রোঁর ওই পরিকল্পনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেন এবং অন্যান্যরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পুতিন বলেছেন, ‘‘(পশ্চিমা দেশগুলোকে) অবশ্যই বুঝতে হবে আমাদেরও অস্ত্র আছে; যা তাদের ভূখণ্ডে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এসব সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার এবং মানব সভ্যতার ধ্বংসের হুমকি তৈরি করে। তারা কি তা বোঝে না।’’
প্রসঙ্গত, পুতিন বলেন, রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। তিনি দেশটির নতুন-প্রজন্মের হাইপারসনিক পারমাণবিক অস্ত্রের কথা প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালে প্রকাশ্যে বলেছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার অত্যাধুনিক এই অস্ত্র মোতায়েনরত অথবা এমন পর্যায়ে আছে যার পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট পশ্চিমা রাজনীতিকদের পরামর্শ দিয়ে আরও বলেছেন, নাৎসি জার্মানির অ্যাডলফ হিটলার এবং ফ্রান্সের নেপোলিয়ন বোনাপার্টের মতো যারা অতীতে রাশিয়ায় ব্যর্থভাবে আক্রমণ করেছিলেন, তাদের ভাগ্যের কথা স্মরণ করুন।
করুণ পরিণতির কথা স্মরণ করে দিয়ে তিনি বলেন, পশ্চিমরা মনে করে এটা (যুদ্ধ) একটি কার্টুন। পশ্চিমা রাজনীতিবিদরা প্রকৃত যুদ্ধের অর্থ কী তা ভুলে গেছেন। কারণ তারা গত তিন দশকে রাশিয়ানদের মতো এই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫-১৭ মার্চ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ছয় বছরের মেয়াদের জন্য পুনরায় পুতিনই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তার আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাশিয়ার ব্যাপক আধুনিকায়িত পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারকে বিশ্বের বৃহত্তম বলে প্রশংসা করেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স
