‘পড় বই গড় দেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে লালন করে নরসিংদীতে শুরু হল ৯ দিন ব্যাপী বর্নাট্য বই মেলার। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল হতে নরসিংদী সরকারি কলেজ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পৌর পার্কে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মেলা শুরু হয়।
বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী সদর আসনের সাংসদ জনাব নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতীক), বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, নির্বাহী পরিচালক (গ্রেড ১) কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, মোস্তাফিজুর রহমান, পিপিএম, পুলিশ সুপার নরসিংদী, প্রফেসর মোস্তাক আহমেদ ভূইয়া, অধ্যক্ষ নরসিংদী সরকারি কলেজ। সভাপতিত্ব করেন জনাব ড. বদিউল আলম জেলা প্রশাসক, নরসিংদী।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, এবারের বইমেলায় ঢাকা ও স্থানীয় প্রকাশনীসহ মোট ৬৮ টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১০০ টি স্টলে তাদের প্রদর্শনী করতেছে । এসএসসি পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় প্রতিদিন বেলা ১১ টায় বইমেলা শুরু হয়ে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলবে মেলা। এবারই প্রথম সরকারি কলেজ সংলগ্ন শিক্ষা চত্তর এলাকায় এই পার্কে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ সাধারণ জনগনের আগ্রহ অনেক বেড়েছে বই মেলাকে ঘিরে।
বিকেল থেকেই মেলায় ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়। প্রতিটি স্টলেই দেখা যায় বই প্রেমীরা কেউ বই কিনছে, কেউ বা আবার মনযোগ সহকারে বই পড়ছে। অনেকেই ব্যস্ত প্রিয় লেখকদের অটোগ্রাফ সংগ্রহে, লেখকের সাথে সেল্ফি তুলতে। অনুষ্ঠান মঞ্চে দর্শনার্থীরা মনযোগ সহকারে বক্তাদের বক্তব্য শুনছেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন। পুরো মেলা জুড়েই ছিল অসংখ্য বই প্রেমী ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীর লক্ষনীয়।
এছাড়াও প্রতিদিনই বই পড়া মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে স্থানীয় কৃষ্টি-কালচার এর উন্নয়ন, জ্ঞান-বিজ্ঞান বিতর্ক, কুইজ সেমিনার ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন বাদ-মাগরিব স্থানীয় ও ঢাকা থেকে আগত শিল্পগোষ্ঠীসমূহের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে।
বিকেলে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় বই মেলার উদ্বোধন। পরে আমন্ত্রিত অথিতি গন একে একে তাদের বক্তব্য প্রদান করেন। নরসিংদীর মানুষের মাঝে বই পড়া, শুদ্ধ উচ্চারণ ও বাংলা ভাষা ও ভাষার জন্য আত্ন উৎসর্গকারী বীর শহীদের আত্নত্যাগের গুরুত্ব তুলে ধরেন তাদের বক্তব্যে।
প্রধান অতিথি লেফটেন্যান্ট কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতীক) তার বক্তব্যে বলেন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে যারা নিজের জীবন অকাতরে বিলিয়েছেন বাংলা ভাষার জন্য তাদের আত্নত্যাগ এর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। পৃথিবীর কোন জাতিকেই নিজের ভাষায় কথা বলার জন্য, ভাষার জন্য জীবন দিতে হয়নি। আমরা গর্বিত আমাদে ভাষা শহীদের আত্নত্যাগে। ভাষা আন্দোলনের আত্নত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীনতার বীজ রোপন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে লাখো মানুষ রক্ত দিয়েছিল।
কচিকাচা, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী ও সুশীল সমাজের মাঝে শুদ্ধাচরন, নৈতিক চর্চা ও বই পড়ার যে ভাটার সৃষ্টি হয়েছে এ বইমেলা তাতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক।