রোমান্টিক জুটি অনন্ত-বর্ষা। তাদের প্রেম ও সংসার নিয়ে নানান কথা, গল্প চর্চিত। ভালোবাসার মাসে চিত্রনায়িকা বর্ষা আনন্দ বিনোদনকে বললেন তাদের ভালোবাসার গল্প।
অনন্ত জলিলের সাথে প্রথম সাক্ষাত্গুলো কেমন ছিল?
প্রথম দেখা-পরিচয় একটি অনুষ্ঠানে। এরপর সময় গড়িয়েছে। আমি তখন গার্লস হোস্টেলে থাকতাম। আমি তো অর্থবিত্তে অত বড় পরিবারের কেউ নই। হোস্টেলের সেই একই খাবার খেতে ভালো লাগত না প্রতিদিন। পরিচয়ের পর থেকে মাঝে মাঝেই অনন্ত আমাকে ওর গাড়িতে করে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাওয়াত। এভাবেই পরিচয়, কথাবার্তা শুরু। আমি জীবনটা খুব বাস্তবতা থেকে দেখি। এমন কোনো কিছু বলে আমি লুকাইনি—যা ভান মনে হবে অনন্ত’র কাছে। অনন্তও তাই। সে কারণেই হয়তো প্রেমটাও নিবিড় হয়েছে।
কিন্তু পরস্পরের প্রেম নিবেদনটা কীভাবে?
একদিন ঘুমানোর আগে অনন্তকে বললাম দেখি ১ মিনিটে কে কতবার ‘আই লাভ ইউ’ লিখে পাঠাতে পারে? আমি জানতাম অনন্ত এসএমএস-এ খুবই স্লো। নানান কাজে ব্যস্ত থাকে সে। তাই ভেবেছিলাম আমিই জিতব। কিন্তু দেখলাম ১ মিনিটে প্রায় হাজারবার ‘আই লাভ ইউ’ লিখে পাঠিয়েছে। পরে জানলাম, ওর হাতে স্মার্ট ফোন ছিল, সে কপি করে ইচ্ছে মতো পেস্ট করে দিয়েছে, আমি পারিনি। কারণ আমার কাছে বাটন ফোন ছিল।
এই যে ধনী-গরীবের প্রেম। এ নিয়ে কি সংসারের শুরুতে কথা শুনতে হতো? বা কোনো বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন?
দেখুন, আমি প্রথমেই বলেছি। আমি খুব গরীব ঘরের মেয়ে। এটা বলতে তো আমার দ্বিধা নেই। কিন্তু আমার আত্মসম্মানবোধ আছে। সেটা অনন্ত বুঝত। আর কখনো অনন্ত এসব বিষয়ে কথা শুনালে হয়তো আমাদের সংসারটাই টিকত না। ও আমাকে শুরু থেকেই সেই সম্মানের জায়গাটা দিয়েছে।
আপনারা দুজন পরস্পরের বাইরে স্ক্রিন শেয়ার করেন না। অনন্তকেও অন্য নায়িকার সাথে কাজ করতে দেন না। এটা কি গভীর প্রেম থেকে না হারানোর ভয়ে?
এটা আমাদের সংসারের সৌন্দর্য রক্ষার্থে। আমি অন্যদেরটা ভুল, আমাদেরটাই ঠিক এটা বলছি না। বলতে পারেন এটা আমাদের কমিটমেন্ট। আমরা আগে নিজেদের পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য প্রাধান্য দিয়েছি সবার আগে। দেখুন, জীবন কয়দিনের। এই পরিচয়, জনপ্রিয়তার মোহও বেশি দিনের না। কিন্তু অনন্ত আমার সারাজীবনের প্রেম। ওর সাথেই আমি বুড়ি হতে চাই। সেই বৃদ্ধ বয়সে এসব কিছুই থাকবে না। শুধু আমি আর অনন্তই থাকব।
ভালোবাসার মানুষের সাথে কোন স্মৃতিটা সবচেয়ে আনন্দের মনে হয়?
আসলে, এখন তো আমি আর অনন্ত দুজনাই ফ্যাক্টরির বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করি। সেক্ষেত্রে আমাদের সন্তানদের নিয়ে খানিক সুযোগ পেলে দেশের বাইরে যখন সময় কাটাই—ঐ সময়টুকু সবচেয়ে আনন্দের মনে হয়।
লিখেছেন : তারিফ সৈয়দ