শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক স্খলনের ঘটনাগুলো খুবই দুর্ভাগ্যজনক : ড. কামাল

”শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক স্থলনের ঘটনাগুলো খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে তা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষকদের থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে থাকতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে হবে। 

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আহমেদ বাওয়ানী একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সুস্থ ও মননশীল শিক্ষার পরিবেশ ও সংস্কৃতি গঠনে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। শিক্ষা একটি মানবাধিকার। প্রত্যেক মানুষেরই শিক্ষার অধিকার রয়েছে৷ প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে মানবাধিকার নিশ্চিত করা যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব প্রণীত সংবিধানে সর্বজনীন শিক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে৷ শিক্ষার অর্থ শুধু পুঁথিগত শিক্ষা নয়। নৈতিকতার বিকাশ, মূল্যবোধ ও পারিপার্শ্বিক সকল শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ”।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অবৈতনিক শিক্ষা নিশ্চিতে জোর দেয়ার আহবান জানান৷ নতুন কারিকুলাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ”আমি আশা করবো নতুন কারিকুলাম শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও যুগোপযোগী মূল্যায়ন করবেন।’ তিনি বলেন, মানবাধিকার সচেতনতাবিহীন ব্যক্তির মানবিক মূল্যবোধ জাগেনা। গাজাতে ইসরায়েলের নির্মম হত্যাযজ্ঞ আমাদেরকে ব্যথিত করেছে। যেসব দেশ এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের সমর্থন দিয়েছে এবং মানবিক বিপর্যয় ঘটিয়ে চলছে তাদের ধিক্কার জানাতে হবে৷ তাদের শিক্ষায়তনগুলোতে মানবিক মূল্যবোধের জাগ্রত করার শিক্ষাদান প্রয়োজন।

তিনি তাঁর বক্তব্যের এক পর্যায়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ভূমিকা রাখছে তাদের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গন থেকে নৈতিক শিক্ষা লাভ না করাতে নৈতিকতাবিহীন ব্যবসায়ীর সৃষ্টি হয়। যেসব ব্যবসায়ী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। নৈতিকতা বিবর্জিত ব্যবসা আমাদের কাম্য নয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা আমাদের অধিকার হরণ করেই চলছে, দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে৷

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়কালে ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন ‘শিশুদের প্রতি সহিংসতা, অবহেলা ও সব ধরনের শোষণ রোধে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে৷ শিশু অধিকার সুরক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। শিশুর ক্ষমতায়ন ও মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে মানসম্মত শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কারণে যে সকল শিশুরা শিক্ষার সুযোগ লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে’।

শেয়ার করুন:

Recommended For You