কিশোরগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত মহিলা এমপি পদে আওয়ামী লীগের হয়ে একডজন নেত্রী মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী এমপিও রয়েছেন। সংরক্ষিত আসন পাওয়ার জন্য এসব নেত্রী ভিড় জমিয়েছেন ঢাকায়। ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীদের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টাও করছেন।
নিজ নিজ জেলার এমপিদের সমর্থন পেতেও তারা সক্রিয় রয়েছেন বলে জানা গেছে। আর এসব আলোচিত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন গণভবন থেকে দলীয় কার্যালয়ে। যোগাযোগ রাখছেন বিজয়ী সংসদ সদস্যদসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও। সাধারণত ছয়টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে একজনকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হয়। কিশোরগঞ্জে ৬ টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে ১ জন সংরক্ষিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
কিশোরগঞ্জে অন্তত একডজন নেত্রী কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাকিয়া পারভীন মনি, দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলারা বেগম আসমাকে আওয়ামী লীগ থেকে সংরক্ষিত আসনে এমপি নির্বাচিত করা হয়।এছাড়াও এমপি পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে তারা হলেন -জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম,জেলা মহিলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক মাহফুজা আরা পলক,কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তানিয়া সুলতানা হ্যাপি, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা মহিলা সংস্থার সভাপতি মানছুরা জামান নতুন, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য শায়লা পারভীন সাথী, কৃষক লীগ নেত্রী অধ্যক্ষ ড.গোলসান আরা বেগম,বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি কোহিনুর আফজল, জেলা উইম্যান অব চেম্বারের সভাপতি ফাতেমাতুজ জহুরাসহ কয়েকজন।
সংরক্ষিত আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ভাষ্য-‘দলের দুর্দিনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে যারা নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে নির্বাচন সফল করেছেন এমন নেত্রীদের মধ্য থেকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।’দলের জেলা কমিটির একাধিক নেতা জানান,এমপি প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন পারিবারিকভাবেই দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। আবার কয়েকজন রয়েছেন বেশ নবীন। প্রার্থীদের কেউ কেউ দলের দুর্দিনে-সুদিনে দলের পতাকা ধরে রেখেছিলেন। আবার কেউ কেউ দলের সুবিধাজনক অবস্থা দেখে নতুন রাজনীতিতে নেমেছেন।দলটির একাধিক নেতা আরো জানান,এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ভোটারদের উৎসাহিত করতে মাঠে যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের মধ্য থেকে কাউকে সংসদ সদস্য করা হলে রাজনীতিতে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। পাশাপাশি জেলার রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে।
জেলা মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম বলেন, আমি জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যাকে ভালো মনে করেন, তাঁকে বিবেচনা করবেন।সব সময় সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কাজ করেছি।তাই মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছি।আশা করি নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিবেন।জেলা মহিলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজা পলক বলেন, আমার ভাই একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনিসহ আমার পরিবারের সবাই দলের জন্য অবদান রেখেছেন।এ বিবেচনায় আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে আশা করি।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেন, ‘আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেই সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।’ প্রার্থীসংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেল কি না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনের সময় কত প্রার্থী ছিল সেটা কি মনে আছে? চৌদ্দশর বেশি প্রার্থী ছিল। তখন সিট ছিল ৪৩টা, এখন ৪৮টা। ৫টা বেশি আছে।’ তিনি আরও বলেন- ‘বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, বাংলাদেশে যতটুকু অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা হয়, সেটা আওয়ামী লীগের ভেতরেই হয়।’