বহির্বিশ্বে ঢাকাকে ব্র্যান্ডিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে একটি কার্যকরী পরামর্শক কমিটি গঠনের আহবান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে ‘বিমান-ঢাকা ট্রাভেল মার্ট ২০২৪’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘বর্তমান যুগ ব্র্যান্ডিংয়ের যুগ। বহির্বিশ্বে আমাদের ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে আমরা বাংলাদেশের ব্রান্ডিং করতে পারি। বিশ্বের বুকে একমাত্র বাংলাদেশই মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন করেছে। ভাষা শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আমাদের যে জাতীয় শহীদ মিনার এটি সবাইকে জানাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি সঠিকভাবে এই ইতিহাস জানাতে পারলে বিদেশিরা বেড়াতে আসবে, বাংলাদেশ সম্পর্কে জানবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এটি বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। গত বছর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আমরা ভলিবল ফেডারেশন থেকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক বীচ ভলিবল বাছাই পর্বের খেলার আয়োজন করেছি। আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশনের পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালুর ধরন, আবহাওয়া এবং সার্বিক পরিবেশ ভলিবল খেলার জন্য খুবই উপযোগী। ভবিষ্যতে কক্সবাজারে আরও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। এভাবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্লাটফর্মে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে হবে।’
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম ‘বিমান-ঢাকা ট্রাভেল মার্ট ২০২৪’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার শুভ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।আয়োজকরা জানান, ভ্রমণ ও পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত মেলাটির টাইটেল স্পন্সর জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং শীর্ষস্থানীয় গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (জিডিএস) প্রতিষ্ঠান সাব্রে মেলার পার্টনার হিসেবে অংশ নিচ্ছে।
তারা জানান, দেশ-বিদেশের ৮০টির অধিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা শতাধীক স্টল ও প্যাভিলিয়নে তাদের পন্য ও সেবা উপস্থাপন করছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছে এয়ারলাইন, হোটেল, রিসোর্ট, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, মেডিক্যাল ট্যুরিজম এজেন্সীসহ ভ্রমণ ও পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মেলা চলাকালীন অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পন্য ও সেবার ওপর দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ মূল্যছাড় অফার করছে। মূল্যছাড়ের আওতায় রয়েছে এয়ার টিকিট, হোটেল ও রিসোর্ট আবাসন, ভ্রমণ প্যাকেজ ইত্যাদি।
পর্যটন মেলাটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এবং ভিজিটরদের জন্য প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ৫০টাকা। মেলার সমাপনি দিনে ভিজিটরদের উপস্থিতিতে এন্ট্রি টিকিটের ওপর গ্র্যান্ড র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। র্যাফেল পুরস্কারের মধ্যে থাকবে জেদ্দা, মদীনা, মালদ্বীপ, দুবাই, ব্যাংকক, দিল্লী, মুম্বাই, কলকাতা, কক্সবাজার, সিলেট এবং চট্টগ্রাম ভ্রমণের জন্য রিটার্ণ টিকিট: ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বান্দরবান এবং কুয়াকাটায় বিভিন্ন তারকা হোটেল ও রিসোর্টে আবাসন, দুজনের জন্য ডিনার কূপন ইত্যাদি।
বাংলাদেশ মনিটর ২০০২ সালে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ঢাকা ট্রাভেল মার্ট’ প্রবর্তন করে। পরবর্তীতে মেলাটি প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের মেলাটি ঢাকা ট্রাভেল মার্টের ১৯তম সংস্করণ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী শফিউল আজিম, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান একে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, বাংলাদেশ ট্যুরিজিম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী আবু তাহির মোহাম্মদ জাবির, সাব্রের বাংলাদেশ কান্ট্রিহেড সাইফুল হক, ট্যুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশের ডিআইজি মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম প্রমুখ।