কুড়িগ্রামের চিলমারীতে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে চলছে দুটি ইটভাটা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ২৫ থেকে ৩৫ বছর ধরে অবৈধভাবে ভাটাগুলো জীব-বৈচিত্র্যের ক্ষতি করে এলেও প্রশাসন নির্বিকার ভুমিকায় রয়েছে। ইট ভাটা দুইটি হচ্ছে থানাহাট ইউনিয়নের ফকিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষা এস.টি ব্রিকস। অপরটি বালাবাড়ি হাট এলাকার কিশামতবানু নালারপাড় এলাকায় ওয়ারেছ ব্রিকস।
১৯৮১ সালে স্থাপিত হওয়া উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের ফকিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে১৫৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর ২০০ গজ দূরত্বে বিস্তীর্ণ ফসলি জমির ওপর গড়ে উঠেছে এস.টি ব্রিকস নামের ওই ইটভাটা।
অন্যদিকে একই ইউনিয়নের নালারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে অনুমোদনহীন ওয়ারেছ ব্রিকস দেদারচে ইট তৈরি ও পুড়িয়ে আসছে। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্টসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাটার মালিক ওয়ারেছ আলী প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বছরের পর ভাটা পরিচালনা করে আসছেন।
এস.টি ব্রিকস নামে ভাটার এলাকার বাসিন্দা শাহের ভানুর বলেন, ‘ভাটার কারণে বাড়িতে গাছপালা হয় না। ফলের গাছে মুকুল আসলেও তা টেকে না। তা ছাড়া ভাটার কারণে আবাদের অনেক ক্ষতি হয়।
ফকিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম শামিউল ইসলাম বলেন, ‘ভাটার আগুনের একটা ছ্যাচানি গন্ধ আসে যেটা সহ্য করার মতো না। তা ছাড়া ভাটার গাড়িগুলো খুব বেপারোয়াভাবে চলাচল করে। ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব ভয়ে থাকতে হয়। ফলে বাউন্ডারি ও গেট করা হয়েছে যাতে ছোট ছোট বাচ্চাগুলো বাহিরে যেতে না পারে, তার পরও ভয় হয়।’
এস.টি ব্রিক্সের পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, গত বছর জনবল না থাকায় ভাটাটি বন্ধ ছিল। তবে ইটভাটাটি অবৈধ নয়। সব কাগজপত্র আছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘এস.টি ব্রিকস ও ওয়ারেছ ব্রিকসের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। অতিদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে অবস্থিত এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুল ইসলাম জানান ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ও অবৈধ ইটভাটা কোনোভাবেই গড়ে উঠতে পারে না। যেসব ইটভাটা অবৈধ, যাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।