কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটি সামুদ্রিক কাছিম ১২৫টি ডিম পেড়েছে। গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে সৈকতের সোনারপাড়া এলাকায় অলিভ রিডলে প্রজাতির এই কাছিম ডিমগুলো পাড়ে। বালিয়াড়িতে প্রায় দুই ফুট গর্ত করে মা কাছিমটি ডিমগুলো পেড়ে আবারও সাগর ফিরে গেছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে খবর পেয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা ডিমগুলো সংগ্রহ করেছেন। এসব ডিম প্রজননের জন্য সোনারপাড়া সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘেরা দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, ডিমগুলো বাচ্চা ফোটাতে ৬০ থেকে ৬৫ দিন সময় লাগবে। এ সময়ে বোরির বিজ্ঞানীরা গবেষণার পাশাপাশি এই হ্যাচারিটি দেখভাল করবেন। হ্যাচারিতে ডিমগুলো প্রজননের জন্যে প্রায় দুই ফুটের দুটি গর্ত খোঁড়া হয়।
ডিমগুলো সংরক্ষণের সময় ভারতের রাঁজকাকড়া বিশেষজ্ঞ ও জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী ড. গোবিন্দ চন্দ বিসওয়াল, বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য গবেষক আহমদ গিয়াস, বোরির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো.শিমুল ভুঁইয়াসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, অলিভ রিডলে প্রজাতির কাছিমটি ১২৫টি ডিম পেড়ে সাগরে ফিরে গেছে। গত বছর একই সৈকতে একটি কাছিম ৯১টি ডিম পেড়েছিল। এই ডিম সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ করে প্রজননের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ৮৪টি সুস্থ-সবল কাছিমের বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছিল। তিনি বলেন, প্রজনন মৌসুম শুরুর পর প্রতিবছর অক্টোবর থেকে সমুদ্রতীরে আসতে শুরু করে কাছিম। এপ্রিল পর্যন্ত কাছিম ডিম পাড়ে।
গবেষণার কাজে কক্সবাজার আসা ভারতের রাঁজকাকড়া বিশেষজ্ঞ ও জৈব সমুদ্র বিজ্ঞানী ড. গোবিন্দ চন্দ বিসওয়াল বলেন, কাছিম প্রজননের এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর। তবে প্রজনন বাড়াতে জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করেন তিনি। কক্সবাজারে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি পরিবেশবাদী সংস্থা নেচার কনজার্ভেশন ম্যানেজমেন্টসহ(নেকম) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাছিমের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ায় কাজ করছে।