চিকিৎসকের নেই সার্জারির ডিগ্রী

বরগুনার তালতলীর দোয়েল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকের পিঠ কেটে ফেলার ঘটনারা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চিকিৎসকের ছিলোনা অপারেশন করার ডিগ্রি। ক্লিনিকটির দুবছর ধরে নেই অনুমোদন। মালিক ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নানান অনিয়মের মধ্যে চালাচ্ছেন ক্লিনিকটি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার প্রসব ব্যাথা নিয়ে তালতলী দোয়েল ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসেন উপজেলার বড় বগী ইউনিয়নের বাসিন্দা লিপি আক্তার। এ সময় তাকে সিজারের পরামর্শ দেয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ওই দিন রাতেই তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডাঃ রুনা রহমান। অপারেশনের সময় নবজাতকের পিট কেটে ফেলেন ওই চিকিৎসক।

ঘটনার পরের দিন রোববার তদন্ত কমিটি গঠন করেন বরগুনা সিভিল সার্জন। ঐদিন বিকেলে ক্লিনিকটিতে তদন্ত করেন তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ কর্মকর্তা ডাঃ সুমন পোদ্দারসহ তিন সদস্যের একটি টিম। তদন্তে বেরিয়ে আসে অপারেশন করা চিকিৎসক ডাঃ রুনা রহমানের নেই সার্জারি অপারেশনের ডিগ্রি। রোগিকে অ্যানেস্থেসিয়া প্রদানকারি ডাঃ এ কে এম রায়হানুল ইসলামের নেই ডিগ্রি।

 

 

এছাড়াও ২০২২ সাল থেকে ক্লিনিকটির লাইসেন্স রেনু করা নেই। ক্লিনিকটির মালিক আসাদুজ্জামান নাদিম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে সাবেক প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়র সুবাদে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দিব্য হাসপাতালটি পরিচালনা করে আসছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: সুমন পোদ্দার বলেন, ওই ক্লিনিকের লাইসেন্সের রেনু করা নেই ২০২২ সাল থেকে। পেশেন্টকে অচেতন করার জন্য এনেস্তেসিয়া প্রয়োগকারি ডা: এ কে এম রায়হানুল ইসলামের ডিগ্রী নেই। প্রসূতিকে অপারেশন করা চিকিৎসক ডা: রুনা রহমানের অপারেশন করার ডিগ্রি নেই। মেডিকেলের নিয়ম অনুযায়ী যে সমস্ত প্রশিক্ষিতা ম্যান পাওয়ার প্রয়োজন তা নেই এই ক্লিনিকে। ক্লিনিকের মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তবে নানান অনিয়মের বিষয়ে ক্লিনিকটির ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম সোহাগের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন স্বদউত্তর না দিয়ে ক্ষিপ্ত হন সাংবাদিকদের উপর।

নবজাতকের বাবা ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার স্ত্রী লিপি আক্তারের সিজার করতে গিয়ে ডাক্তার আমার বাচ্চার পিঠ কেটে ফেলে। কাটা স্থানে ক্ষতর অবস্থা বেশি একটা ভালো নয়। আজকেও এই হাসপাতালে থাকবো অবস্থার উন্নতি না হলে আগামীকালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে যাবো।

বরগুনা সিভিল সার্জন ফজলুল হক জানান, তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন:

Recommended For You