টেবিলে প্লেটে থরে থরে সাজানো বাহারি রঙের নানা পিঠা। পাকন, ভাঁপা, পুলি, চিতই, পাটিশাপটা, নকশি পিঠা, ফুল পিঠা, মাল পোয়া, রস পাকনসহ নাম না জানা হরেক রকম পিঠা। এ যেন রসের মেলা। নানা স্বাদের বাহারী এসব পিঠা দেখলেই মুখে জল চলে আসবে যে কারো।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে এমনই আয়োজন ছিল কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকার সাহাপাড়ায় রিলায়েন্স মডেল স্কুল এন্ড কলেজের আয়োজনে পিঠা উৎসবে। প্রথমবারের মতো বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। যেখানে নানান স্বাদের প্রায় ৫০ রকমের পিঠা নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা রকম পিঠা। যান্ত্রিক জীবনে নতুন প্রজন্ম জানে না এসব পিঠার নাম। গ্রাম-বাংলার বিলুপ্তপ্রায় লোকজ খাবার ধরে রাখা ও নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব।
ফিতা কেটে প্রধান অতিথি হিসেবে পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিলায়েন্স মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হেলাল উদ্দিন, মিঠামইন গোপদীঘি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আওয়াল, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আব্দুস সালাম, এডুকেয়ার কোচিং সেন্টারের পরিচালক সৈয়দ আবু ইমাম মোহন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবুল বাসার বাদশা, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম তুষার সহ আরো অনেকেই। উৎসবে বাহারী সব পিঠা দেখে মুগ্ধ হয় নানা বয়সী দর্শনার্থী।
শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পিঠা উৎসবের মাধ্যমে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পিঠাকে ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তারা। পিঠা উৎসবের আয়োজক রিলায়েন্স মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বিলুপ্তপ্রায় ও নাম না জানা পিঠাগুলো নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করে দিতে ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এমন আয়োজন। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন,‘এমন সুন্দর আয়োজন সত্যি ভালোলাগার মতো। গ্রামীণ এই ঐতিহ্যকে আমাদের সবাইকে ধরে রাখতে হবে। শীতের সময়ে গ্রামের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী খাবার এই পিঠা। বিদেশি খাবারের দিকে ঝুঁকছে নতুন প্রজন্ম। তাই গ্রামবাংলার সুস্বাদু খাবার পিঠাকে ধরে রাখতে এমন আয়োজন আরও বেশি বেশি হওয়া দরকার। পরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন অতিথিরা।