বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডামি নির্বাচনের পর একটি অবৈধ সংসদ বহাল থাকাবস্থায় ডামি শপথে অবৈধভাবে জন্মগ্রহণ করা এই তথাকথিত দ্বাদশ সংসদ বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সংসদ জনগণের নয়, আমি আর মামুদের।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংসদে নামে-বেনামে-ছদ্মনামে সবাই আওয়ামী লীগের লোক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এদের অন্নদাত্রী। আওয়ামী লীগ এককভাবেই লুটেছে ২২৩ আসন। ৬২ জন স্বতন্ত্র ডামি এমপির ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের নেতা। সেই হিসাবে ২৯৯ জনের মধ্যে ২৮০ জনই মূলত আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি শেখ হাসিনার আশীর্বাদের বিরোধী দল। এদেরও লালন-পালন করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা দয়া করে ১১ আসন ছেড়ে দিয়েছেন তাদের জন্য।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ৭ জানুয়ারি ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘লিফলেট বনাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ডামি ব্যালটের লড়াই। দেশের ৯৫ ভাগেরও বেশি ভোটার শেখ হাসিনার কথিত ‘ব্যালট’ বর্জন করে ‘লিফলেট’ গ্রহণ করেছে। এটি গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয়। এটি গণতন্ত্রের পক্ষের ৬৩ রাজনৈতিক দলের বিজয়। গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয় ঠেকাতে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে নির্বিকার ও নিবিষ্টচিত্তে। হিংসা, হানাহানি আর অশান্তি মূল আদর্শ হিসেবে গণ্য করেন আওয়ামী নেতা
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ, নাৎসিবাদ ও মধ্যযুগের ভাবধারায় পুষ্ট একটি রাজনৈতিক দল। অবৈধ আওয়ামী সরকার এক সর্বনাশা বিভীষিকা সঞ্চার করে নতুন নতুন অশুভ পরিকল্পনার মাধ্যমে জনগণকে বঞ্চিত করে ক্ষমতা ধরে রাখছে। এবারও তারা সাড়ে ১২ কোটি ভোটারদের বঞ্চিত করার মনুষ্যত্বহীন চক্রান্ত করেছে। আওয়ামী লীগ যে বরাবরই গণতন্ত্রের শত্রু, সেটির কুৎসিত স্বরূপ এবারও উন্মোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন অপরাধপ্রবণ একটি রাজনৈতিক দল। জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছা এদের কাছে মূল্যহীন। আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল, যারা মানবিক পরিবেশের মূল থেকে উৎসারিত নয়। এ জন্য বহু মত ও পথকে তারা সহ্য করতে পারে না। সে জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনকে আড়াল করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোট বর্জিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বাকশালীয় সংসদের কলংকিত যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ। পৃথিবীতে অদ্ভুত সরকারের অভিনব কিসিমের অদ্ভুত এক এই সংসদের সব সদস্যই এক দলের। বিরোধী দল কারা হবে, তারা কে কি বলবে-করবে, স্বতন্ত্র লীগের ভূমিকা কী হবে— সবকিছুই পুতুল খেলার মতো সুতার গোড়া ধরে রাখবেন একজন।