ফেনীর ফতেহপুর এলাকায় নির্মিত জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি উদ্বোধনের আড়াই মাসেও বুঝে পায়নি ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।ফলে আড়াই মাসেও মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি মসজিদটি।
গতকাল রবিবার সকাল পর্যন্ত গত দুদিন শহরের অদূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানের এ প্রকল্পটির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখনও এর ২০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। অথচ গত বছরের ৩১ অক্টোবর ঘটা করে মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি উদ্বোধন করা হয়েছে।
সরেজমিন তদন্ত দেখা, যায়,মসজিদটির বাইরে ইট ও বালুর স্তুপ রয়েছে। চারতলায় মূল মসজিদের তিনভাগের দুইভাগ টাইলস বসানো হয়েছে। সীমানা প্রাচীর, ভেতর ও বাইরের সৌন্দর্যবর্ধন, পানি সরবরাহ লাইন দেয়া হয়নি। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সাব-স্টেশন ও ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়নি।এছাড়া বিদ্যুত সরবরাহ না থাকায় এখনও গভীর নলকুপও বসানো হয়নি। বাকি রয়েছে প্রবেশের মূল রাস্তাটি সহ আরও অনেক কাজ। জানা যায়, বারবার তাগিদ দেয়া হলেও ঠিকাদাররা কাজ করছেন ধীরগতিতে।যার করনে কবে নাগাদ এই কাজটি শেষ হবে সেটিও নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্টরা বলতে না পারায় এলাকাবাসী সহ মুসল্লিরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত বিভাগ।নির্মাণ কাজ করেছে মেসার্স আরএসসিএল এন্ড আরএফ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গত ৩১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফেনীর এই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবুও এর আড়াই মাসেও মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি মসজিদটি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এটা শুধু মসজিদ না, ইবাদতের পাশাপাশি একটি ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও। ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চার তলা বিশিষ্ট ২ হাজার ৬০ বর্গমিটারের মসজিদের দুই, তিন ও চার তলায় রয়েছে মূল নামাজ ঘর। মডেল মসজিদের রয়েছে ১০তলা বিশিষ্ট মিনার, অর্নামেন্ট গ্লাস, মসজিদের মাঝবরাবর গম্বুজ, ঝাড়বাতি।থাকবে এয়ারকন্ডিশন ও কিতাব সেলফ। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় নামাজ আদায়ের সুবিধা।
এছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন-প্রশিক্ষণ, ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র, ইসলামি গ্রন্থাগার, অটিজম কর্নার, দাফন কার্যক্রমের ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হেফজখানা, প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা, কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সম্মেলনকক্ষ, ইসলামিক দাওয়া, ইসলামিক বই বিক্রয়কেন্দ্রসহ দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধার কথাও রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারের আর্থিক সমসার কারণে কাজে ধীরগতি দেখা দেয়। উদ্বোধনের পর দুই মাস বন্ধ ছিল। সোমবার রাত থেকে কোনরকমে কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকমতো কাজ করলে দুই মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও ফেনীস্থ ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মীর মুহাম্মদ নেয়ামত উল্যাহ বলেন, মসজিদটি এখনো তারা বুঝে পাননি। এ কারনে তাঁরা ইমাম-মুয়াজ্জিন, দুইজন খাদেম নিয়োগের প্রক্রিয়াও এখনো পর্যন্ত শুরু করতে পারেননি। ফেনী জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুছাম্মৎ শাহীনা বলেন, সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে।দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।