কুকুর-বিড়ালের কামড়ে আতংক লক্ষ্মীপুরবাসী

লক্ষ্মীপুরে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা সদর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড়ে আহত হন তারা। 

আহত রোগীদের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়েছেন মো. মুয়াজ (১৬), আবির (আড়াই বছর), আব্দুর রহিম (৫৫), রহিমা খাতুন (৩০), রিনা আক্তার (২৯), শামছুন নাহার (৪৫), মিতু (২৩), ফরহাদ (৮), হোসনেয়ারা (৩৫), রিহান মাহমুদ (৬) ও সাব্বির আহমেদসহ (১৮) দুই শতাধিক রোগী। সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসনেয়ারা বেগম (৩৫)। তিনি বলেন,শনিবার ‘আমি মোবাইল ফোনে বিদেশে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ করে একটি কুকুর এসে আমার গালে কামড় দেয়।’

একই গ্রামের ৬ বছর বয়সী রিহান মাহমুদ নামে এক শিশুকেও হাসপাতালে কুকুরের কামড়ের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সকালে বাড়ির উঠানে রিহান খেলছিল। এ সময় কুকুর এসে রিহানের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। কুকুরটি তার হাতের বাহু ও পিঠে তিনটি কামড় দেয়। বিড়ালের কামড়ে আহত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ এলাকার সাব্বির আহমেদ (১৮) হাসপাতাল এসে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিড়াল নিয়ে দুষ্টামি করছিলাম। এরমধ্যেই বিড়াল আমার হাতের আঙ্গুলে কামড় দেয়। কোন সমস্যা হয় কি না, এ নিয়ে ভয় লাগছে। তাই হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছি।’

ভ্যাকসিন প্রদানকারী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আব্দুর রব বলেন, ‘সকাল থেকে ভ্যাকসিন দিচ্ছি। বিপুল সংখ্যক রোগী এসেছে। এখনো হিসেব করতে পারিনি। রোগীদের হাত-পিঠ ও গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কুকুর বিড়ালের কামড়ের দাগ রয়েছে।’ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমান হোসেন বলেন, ‘কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে সকাল থেকে শতাধিক রোগী এসেছে। তাদের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। কুকুর-বিড়াল থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আহম্মেদ কবির বলেন , আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে চলাফেরা করা উচিৎ। পোষা প্রাণীদের খাবার, বাসস্থান এগুলোর যত্ন নিতে হবে। এসময় অনেক বাচ্ছা প্রসব করে রাস্তা – ঘাটে সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে। তাতেও মা – বাবা কুকুর -বিড়াল তাদের সন্তানদের হারিয়ে বিপদগ্রস্থ হতে পারে। তবে প্রাণীদের কিছু মারাত্মক রোগ আছে, যা হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। একবার অসুস্থ হলে তখন আর ওষুধ কাজ করে না। তাই রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে ঘরের পোষা প্রাণীদের টিকা দিতে হয়। এর মধ্যে কিছু রোগ, যেমন বিড়াল ও কুকুরের জলাতঙ্ক মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। তাই পোষাপ্রাণী ও মানুষ ২ পক্ষের সুরক্ষার জন্যই টিকা প্রয়োজন। বিড়ালের বয়স ৩ মাস হওয়ার পর প্রথম ফ্লুর ভ্যাকসিন দিতে হয়। প্রথম বার ভ্যাকসিন দিলে ২১-২৮ দিনের মধ্যে বুস্টার ডোজ দিতে হবে। বুস্টার ডোজের পর তার মেয়াদ থাকে ১ বছর। তাই প্রতি ১ বছর পরপর টিকা দিতে হবে। জলাতঙ্ক বিড়ালের মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ। ‘রেবিস ভ্যাকসিন’ বিড়ালকে জলাতঙ্ক রোগ থেকে রক্ষা করে। এটি ৩ বছর, ১ বছর, ৬ মাস বিভিন্ন মেয়াদী হয়ে থাকে।

শেয়ার করুন:

Recommended For You