
কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে হঠাৎ করেই দুদিন ধরে কুঁড়া হচ্ছে বিশাল বালিয়াড়ি। স্কেবেটর দিয়ে কুড়তে কুড়তে করা হয় বিশাল গর্ত। গর্ত থেকে ৫/৭ জন কর্মী বের করছে বিশাল আকৃতির হাঁড়। হাঁড়গুলো জমা রাখা হচ্ছে একপাশে। এক একটা হাড় দেখতে অনেক বড়। ওজনও অনেক ভারি। দুপাশে জড়ো হচ্ছে উৎসুক মানুষ। কৌতূহল মনের আগ্রহ জন্মালো কি হচ্ছে এখানে!
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) পাশে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বুরি) করছে এমন কর্মকাণ্ড। ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল সৈকতের হিমছড়ি অংশে বিরাট মৃত তিমি ভেসে আসে। তিমিটি সৈকতের বালিয়াড়িতে পুতে ফেলা হয়। প্রায় তিন বছর পর পুঁতে রাখা জায়গাটি কুড়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে তিমিটির কঙ্কাল। কঙ্কাল সংগ্রহ করতে সোমবার (২২ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয় বিশাল কর্মযজ্ঞ।
সেখানে কথা হয় বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, আমরা যেহেতু সমুদ্র গবেষণা নিয়ে কাজ করছি সমুদ্র সম্পর্কিত সকল তথ্য বা মানুষকে সমুদ্রের প্রতি আগ্রহ করার জন্য তিমিটির কঙ্কাল সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট সংগ্রহ করে প্রদর্শনী করবে। যাতে এ সম্পর্কিত গবেষণা কার্যক্রম ভবিষ্যতে করা যায় এবং যারা সমুদ্র সম্পর্কে আগ্রহী তারা যাতে এগুলো দেখতে পারে এবং গবেষণার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। এটাই হলো আমাদের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের এই কর্মকর্তা জানান, এটাতে দেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টিম করা হয়েছে। তারা এটাকে সংরক্ষণ করার জন্য কাজ করবে। যেখানে আর্কিওলজিস্ট এবং জাতীয় জাদুঘরের দু’জন বিশেষজ্ঞ আছে। উনারা মিলে পূর্ণাঙ্গ অভয়ব তৈরি করবেন। আমরা শুধু উত্তোলনের কাজটা করছি।
তিনি বলেন, দুদিন ধরে কাজটা করছি। আমরা আজকে (মঙ্গলবার) পুরো কঙ্কালের অভয়ব পেয়ে গেছি। এখন কঙ্কালটা নষ্ট না করে কিভাবে সংরক্ষণ করা যায় সেভাবে কাজ করছি। জানা গেছে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন অংশে মাঝেমাঝে ভেসে আসে মৃত তিমি। হিমছড়ি সৈকতে ২০২১ সালের ২ মে ভেসে আসে একটি মরা তিমি। এর আগে ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল হিমছড়ি সৈকতে ভেসে এসেছিল ১৫ ও ১০ টন ওজনের দুটি মৃত তিমি। তিমিগুলো কি কারণে মারা গেছে তার কারণ জানতে করা হয়েছিলো অনুসন্ধান কমিটি। কিন্তু তার নির্দিষ্ট কোন কারণ বের করতে পারেনি তারা।