সারাদেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জেও গত কয়েক দিন ধরে হাড়কাঁপানো শীতের সঙ্গে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন।বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে।হিমেল হাওয়া ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। এসব পরিবারে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে তারা। জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মেলেনি দুই দিন যাবত। বাস-ট্রাকসহ ছোট ছোট যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। জেলায় দিনের চেয়ে রাতে শীতের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে,মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের নিকলীতে এযাবতকালের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০%। শীতের প্রভাবে শহরে মানুষের উপস্থিতি কম। জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গত কয়েক দিনের জেঁকে বসা শীত ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের ভিড় বেড়েছে।
ভ্যানচালক আলী হোসেন বলেন, তীব্র শীতের সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা বাতাস বইছে। এতে ভ্যান চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তবুও পেটের তাগিদে ভ্যান নিয়ে বের হয়েছেন। শহরের বড়বাজারে ফুটপাতে শীতের কাপড় বিক্রি করেন রমজান আলী। তিনি বলেন, এ বছর কয়েক দিন যাবত তীব্র শীত পড়ায় কাপড় মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে যেসব শীতবস্ত্র এসেছে সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে। সমাজের বিত্তবানদেরও অসহায়, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জনভোগান্তি বেড়েছে।গত সোমবার থেকে জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষ কষ্টে জীবন যাপন করছে।হাঁড়কাঁপানো শীতে হাটবাজার ও রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।শীতের প্রকোপ বাড়ায় ঘরে ঘরে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে বৃদ্ধ ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো:লুৎফর রহমান জানান,এ বছর জেলায় ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র হিসেবে ৬৬ হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।ইতিমধ্যে ৬০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।বাকি গুলিও বিতরণের কার্যক্রম চলছে।এ বছর পর্যাপ্ত সংখ্যক শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।