শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পাবনায় মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। তবে দীর্ঘ বছরেও বাড়িটিতে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাবনার সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শহরের হেমসাগর লেনে মহানায়িকার স্মৃতি বিজরিত পৈত্রিক বাড়িতে সুচিত্রা সেনের আবক্ষ ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। এ সময় তার আত্মার শান্তি কামনায় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. রামদুলাল ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. নরেশ মধুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, পরিষদের সহ-সভাপতি ফরিদুল হক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট পাবনার সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাজহার প্রমুখ।
সভায় পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, সুচিত্রা সেন পাবনা তথা উপমহাদেশের একজন গর্ব, পাবনার সন্তান। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় তার প্রয়াণের দশ বছর পার হলেও এখানে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা হবার কথা ছিল সেটি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
আজ তার প্রয়াণ দিবসে আমরা দাবি জানাই অতি দ্রুত যেন বাড়িটিতে সংগ্রহশালা করা হয়। তা না হলে পাবনার সাংস্কৃতিক কর্মীরা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. নরেশ মধু বলেন, পরিষদের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেবার পরিকল্পনা চলছে। একটি গবেষণাপত্র বের করার পরকিল্পনা করেছি। আমরা চাচ্ছি চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবার জন্য, ভারতের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য। যাতে পরিষদটির কার্যক্রম চলমান থাকে। কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সবকিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে এটি কিভাবে করা যায় সেই প্রক্রিয়া চালাচ্ছি। আর যেহেতু মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের সাথে আছে, যদি আমরা সবাই মিলে মহামান্যকে বলি তাহলে বিশ্বাস করি মহামান্য কাজটি করতে সম্মত হবেন।
পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. রামদুলাল ভৌমিক বলেন, সরকারি প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। এই বাড়িটি উন্নয়নের জন্য একটি প্যাকেজ নেয়া হয় তখন ৮টি প্রতিষ্ঠান ছিল সেই প্যাকেজে। এখন বাড়তে বাড়তে ২১টি প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে সেই প্যাকেজ প্রকল্পে। সেটির কাজ মোটেই এগুচ্ছে না। এখন একটিই কাজ হলো যদি এই বাড়িটিতে উন্নয়ন করতে হয় তাহলে ওই প্যাকেজ থেকে সুচিত্রা সেনের বাড়িটিকে বাইরে নিয়ে আলাদা প্রকল্প করতে হবে। তাছাড়া বিকল্প কিছু দেখি না। ২০১৪ সালে বাড়িটি উদ্ধার হয়েছে, অনেক বছর হয়ে গেলো। এখনও বাড়িটিতে তেমন কিছুই হয়নি। কিন্তু দিনে দিনে বাড়িটি নষ্ট হচ্ছে। সরকারের প্রতি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে বাড়িটি উন্নয়ন করতে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেই।