সরকারকে প্রত্যাখান করেছে জনগণ : চরমোনাই পীর

 ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংগ্রামী আমীর- মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারকে বাংলাদেশের জনগণ অঘোষিত যুদ্ধের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন নিয়ে মিথ্যাচার বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের ঘৃণা দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। যা বিস্ফোরণ হলে অবৈধ সরকারের নির্মম পতন হবে। পীর সাহেব চরমোনাই দেশের জনগণ ও সচেতন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম নিয়ে চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ক্ষমতার সর্বোচ্চ দায়িত্বে থেকে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে অসত্য কথা বলেন, ৭৫ এরপর নাকি এবার সবচেয়ে উৎসবমুখর ভোট হয়েছে। দেশের জনগণ একতরফা প্রহসনের ভোট বর্জন করে বর্তশান সরকারকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। লজ্জা থাকলে সরে দাড়ানো উচিত ছিল। ক্ষমতার মোহে মত্ত হয়ে এবং ভয় ও শঙ্কার কারণে তড়িঘড়ি করে ডামি মন্ত্রীসভা গঠন ও শপথ করেছে। তিনি বলেন, তামাশারও একটা শেষ আছে। এ সরকার সবকিছুতে সীমা লঙ্ঘন করছে। দেশকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সম্মেলনে পূর্ববর্তী কমিটি ভেঙে দিয়ে ২০২৪ এর জন্যে নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন। সভাপতি নূরুল বশর আজিজী, সহ-সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর এবং সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাছির আহমাদ-এর নাম ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি।
 আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত কেন্দ্রীয় সম্মেলন’২৪-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল ইউসুফ আহমাদ মানসুরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়েখে চরমোনাই), মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খানসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, আদর্শ রাষ্ট্র গড়তে আদর্শ মানুষ প্রয়োজন। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রতিটি কর্মীদের নৈতিকতা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও আদর্শের দিক থেকে উত্তম মানে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। দ্বীন বিজয়ের সংগ্রামে ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন ইসলামী চেতনা এই জাতির শিকরে প্রোথিত আছে। ইনশাআল্লাহর চেতনা নিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। দেশীয় বোধ বিশ্বাস ও সংস্কৃতি উঠিয়ে অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটিয়ে ইসলামকে অপসারণ এর পায়তারা করছে। সকল সচেতন ও দেশপ্রেমিক মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরতে হবে। ভিনদেশী চক্রান্ত হতে প্রিয় ভূখণ্ডকে রক্ষা করতে হবে।
মহাসচিব- অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, প্রশ্ন আসছে আমরা স্বাধীন না পরাধীন। শরীরের রক্ত বরাদ্দ করে দেশ ইসলাম ও স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব কে রক্ষা করতে হবে।
যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ভরা মৌসুমে চাল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দুর্ভিক্ষের বার্তা দিচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের অবাধ লুটপাট দেশকে আজ চরম সংকটের মুখোমুখি করে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশবিরোধী অবৈধ সরকারকে উৎখাত করার আন্দোলন শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আমাদের সমাজ দেশের জনগণ ইতিহাসের সবচেয়ে অস্থির সময় পার করছে। ট্রান্সজেন্ডার এর মত ঈমান ও সমাজবিধ্বংসী এজেন্ডা এবং দেশীয় বোধ বিশ্বাস সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে প্রণীত শিক্ষা কারিকুলাম’২১ জাতি হিসেবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার। চরম অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে এগোচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীরা। এভাবে একটি সমাজ ও রাষ্ট্র চলতে পারে না।
শেয়ার করুন:

Recommended For You